ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মমেক ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন প্রতিমন্ত্রী মুরাদ

নিউজ ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
মমেক ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন প্রতিমন্ত্রী মুরাদ

ঢাকা: ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে (মমেক) পড়ার সময় ছাত্রদলের রাজনীতি শুরু করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। পরে তিনি বাবার ক্ষমতায় ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন।

এমনটাই জানিয়েছেন ডা. মুরাদ হাসানের এক ব্যাচ সিনিয়র ও ৯৮-এর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ইসহাক। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান আদর্শচ্যুত হয়ে ছাত্রলীগের পদ বাগিয়েছেন তার বাবার জোরে। মুরাদ ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক থাকা অবস্থাতেই ক্ষমতার পালাবদল হয়। অর্থাৎ বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই আমলেই তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী।

তিনি আরও জানান, মুরাদ হাসান ১৯৯৫ সালে মমেক শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক হয়েছেন। এর এক বছর পর আমরা মেডিকেল কলেজ ছাড়তে বাধ্য হলেও তিনি এক পদ থেকে আরেক পদে চলে যান। পার্থক্য শুধু দল আর আদর্শের।  

তৎকালীন ছাত্রলীগের একাধিক নেতৃস্থানীয়রা জানান, মুরাদ হাসান বিএনপির শাসনামলে (১৯৯৪) মমেকে ভর্তি হন। মমেক শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদকের পদও বাগিয়েছিলেন। অনেকটা আয়েশি ভঙ্গিতেই বিএনপির শাসনামল অতিবাহিত করেন। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।  

এর আগে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) এক অনুষ্ঠানে ডা. মুরাদ হাসানকে ‘ভূঁইফোড়’ ডাক্তার দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি ছাত্রলীগে যোগ দেন।  
সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি জাইমা রহমান সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে ‘অশালীন’ মন্তব্য করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী। তার ‘নারীবিদ্বেষী’ বক্তব্য নিয়ে দেশজুড়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।  

নারীবিদ্বেষী, বিকৃত ও যৌন হয়রানিমূলক বক্তব্য দিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন দাবি করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে ওই বক্তব্য দিয়ে কোনো ভুল করেননি বলে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। তিনি জানান, ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করার প্রশ্নই ওঠে না। কিংবা প্রত্যাহার করার ব্যাপারে সরকার ও দলের ওপর থেকে কোনো চাপও নেই।  

নিজে ‘অশালীন’ ভাষায় অন্যকে আক্রমণ করলেও রোববার (৫ ডিসেম্বর) এক অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বলেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় প্রতিপালিত হয় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা। সেজন্য সাধারণ জনগণসহ সবার সঙ্গেই তাদের ভাষা ও ব্যবহারে মার্জিত, শোভন ও শালীন বোধ থাকা বাঞ্ছনীয়। সেবা দেওয়া ছাড়া তারা কারও সঙ্গেই কোনো অশোভন আচরণ করার অধিকার রাখেন না। এটা আমার কথা নয়, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা।

জামালপুর সার্কিট হাউজে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এদিকে, জিয়া পরিবারকে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিভিন্ন শ্রেণিপেশা থেকেও একই দাবি উঠেছে। এ বক্তব্যের জন্য প্রতিমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।  

সোমবার এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টি তার (তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান) ব্যক্তিগত বক্তব্য হতে পারে। এটা আমাদের কোনো বক্তব্য না, এটা আমাদের দলের কোনো বিষয় না। কেন এ বক্তব্য তিনি দিয়েছেন জানি না। তবে বিষয়টি নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব।

আরও পড়ুন: 
প্রতিমন্ত্রী মুরাদ ছাত্রদল করতেন: ফখরুল
প্রতিমন্ত্রী মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।