ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

যুদ্ধ করে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে: ফখরুল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১
যুদ্ধ করে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে: ফখরুল বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম

সিলেট: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া বিএনপি কখনও নির্বাচনে যাবে না। নির্বাচন দিতে হলে অবশ্যই আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, একাত্তর সালে যেভাবে দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, প্রয়োজনে দেশবাসী, সেভাবে যুদ্ধ করে বর্তমান অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি সেই দিন আর বেশি দূরে নয়।

শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেট নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে সিলেট মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও গণসংগীত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ একজন ব্যক্তি কিংবা একক কোনো দল করেনি, এদেশের আপামর জনতা করেছেন। অথচ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, তাজউদ্দিন আহমদ, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানীর নামও উল্লেখ করা হয়নি। তাদেরকে আড়ালে রেখেছে। জোর করে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস মুছে দিয়ে একটি বিভ্রান্তমূলক গল্প নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছে।

সমাবেশে আসা বিএনপি কর্মীরা

তিনি অভিযোগ করেন, ১৬ ডিসেম্বর জাতীয়ভাবে যে সুবর্ণজয়ন্তী উদযান করা হয়েছে সেখানে শেখ মুজিব ছাড়া আর কারো নাম নেওয়া হয়নি। অথচ ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সিলেট শত্রুমুক্ত করতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, আমাদের স্বপ্ন ছিল একটি গণতান্ত্রিক দেশ গড়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছরেও আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য বাসযোগ্য একটি ভূমি রেখে যেতে ব্যর্থ হয়েছি। কেননা, সরকারের ভেতরের কিছু মানুষ কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছে, টাকা বিদেশে পাচার করছে। দেশে আজ গণতন্ত্রের কবর রচনা করা হচ্ছে। এর প্রমাণ জনগণের ভোটে বার বার নির্বাচিত একজন প্রধানমন্ত্রীকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া এখন মুমূর্ষু অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না। উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্পের কথা বললেও, এ দেশে দরিদ্র্য মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সিলেট শহরসহ দেশের বৃহত্তর এই উত্তর-পূর্বাঞ্চল পাকিস্তানি শত্রুমুক্ত হয়। এ উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সিলেট বিভাগীয় সমন্বয় কমিটি। জাতীয়, দলীয়, দেশাত্মবোধক ও গণসংগীত পরিবেশনের পর বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয় অতিথিদের আলোচনা।

এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটি, সিলেট বিভাগের আহ্বায়ক ও সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

বক্তব্য রাখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এবং সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম।

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সিলেট বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সদস্যসচিব ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন।

এদিকে, সমাবেশ শুরুর আগে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই শ্লোগানকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে ভাঙচুর ও চেয়ার ছোড়াছুড়ি করেন। ঘটনাটি নগরের তালতলা ভিআইপি রোড পর্যন্ত ছড়ায়। এ সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন। প্রায় আধঘণ্টা পর কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে সমাবেশ শুরু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১
এনইউ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad