পাবনা: পাবনায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় সাবেক যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মনির আহমম্মেদকে ছুরিকাঘাত করেছে প্রতিপক্ষরা।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে শহরের জেলা বিএনপির কার্যালয় প্রাঙ্গনে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। সমাবেশ চলাকালে সমাবেশ স্থলে জেলা যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয় মঞ্চের সম্মুখে। এসময় জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ওয়ার্ড থেকে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। অল্প সময়ের মধ্যে সমাবেশ স্থলে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দুপুর ২টা থেকে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হলেও কেন্দ্রীয় নেতারা বিকেল সাড়ে ৩টায় সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হন। এসময় বক্তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকার প্রধানকে উদ্দেশ্য করে নানা কথা বলেন।
পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহামুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ এমপি, কেন্দ্রীয় বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট শিমুল বিশ্বাস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহীন শওকত, সহ সাংগঠনিক ওবায়দুর রহমান চন্দন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, কেন্দ্রূীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ খান, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি রফিক হাওলাদার, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা তাবিবুর রহমান সাগরসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা সমাবেশে বক্তব্য দেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা যুবদলের সদস্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান, জেলা বিএনপির নেতা আনিসুর রহমান ও নূর মোহম্মদ মাসুম বগা।
সমাবেশের প্রধান বক্তা কেন্দ্রীয় নেতা সাংবাদিক শওকত মাহমুদ সরকার প্রধানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যদি খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার অভাবে কিছু হয় তা হলে শেখ হাসিনা তোমারো কিছু হবে। এই পাবনা থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন শুরু হতে পারে। মানুষ আজ জেগে উঠেছে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পতন করে ছাড়বো আমরা। ’
দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দিন শেষ। বিভিন্ন দেশ তাদের ভিসা বাতিল করেছে। একমাত্র পাশ্ববর্তী ভারতের মোদীর দর্জা তাদের জন্য খোলা আছে। এই পাবনাতে সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। মানুষ এখন আর নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চাইনা। ঝাটা মার্ক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে তবু নৌকা নয়। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য মুক্তি না করা হলে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ’
এদিকে সংঘর্ষের বিষয়ে পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, অনুমতি নিয়ে পাবনা জেলা বিএনপি তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছিলেন। আমাদের পুলিশ সমস্যরা সমাবেশের নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বরত ছিল। সমাবেশ স্থলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ কেউ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২১
এনটি