ঢাকা: ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মধ্যরাতের ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরাম নেতারা।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) একাদশ নির্বাচনের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে গণফোরাম সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী এক যৌথ বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, এদেশের আপামর সাধারণ জনতার সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার অর্থাৎ ভোটাধিকার সম্পূর্ণরূপে হরণ করা হয়েছে। যার সূচনা হয়েছিল ২০১৪ সালের বিনা ভোটের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বিলুপ্ত করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা গণতন্ত্রের বুকে ছুরিকাঘাত। গৃহপালিত কিছু বিরোধীদল নিয়ে ১৫৩টি আসনে বিনা ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। পরবর্তী ৫ বছর লুটপাট, নৈরাজ্য, বিচার ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংসের মাধ্যমে এদেশের জনগণকে এক দুঃশাসনের চরম যাতাকলে পিষ্ঠ করে। পরবর্তীতে দেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে গণতান্ত্রিক উপায়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে অংশগ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আস্থা রেখে পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রহসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। যদিও ওই নির্বাচনে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না তবুও ঐক্যফ্রন্টের ভরসা ছিল জনগণ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে ঐক্যফ্রন্টকে বিপুল ভোটে জয়ী করবে। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বুঝতে পারে জনগণের ভোট কখনোই তাদের পক্ষে যাবে না। তাই তারা প্রশাসনকে ব্যবহার করে ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ব্যালটে ছাপ মেরে ভোট বাক্স ভরে ফেলে এবং দিনের বেলায় জনগণকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়ে নূরুল হুদা নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের কবর রচনা করে।
নেতারা বলেন, বর্তমান সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি স্বরূপ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপের নামে আরেকটি নাটক মঞ্চস্থ করার আয়োজন করেছে। বাংলাদেশের জনগণ এখন সব জানে এবং বুঝে তাই তারা এ দুঃশাসনের অবসান চায়। গণফোরাম জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সব গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দল নিয়ে একটি গ্র্যান্ড কনভেশনের আয়োজন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বা নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
এমএইচ/আরবি