ঢাকা: অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালনকারী মানুষের মৌলিক ও রাজনৈতিক দাবিসমূহ বাস্তবায়নে রাজনীতির মূলধারার স্বপক্ষে জনমত সুসংগঠিত করা ও বঞ্চিত-শোষিত গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংকল্প নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ মাইনরিটি পিপলস পার্টি।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বর্ণাঢ্য এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে দলটির আত্মপ্রকাশ হয়।
আয়োজনে দলটির ১৫১ সদস্যের মধ্যে ২১ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। এ দলের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন শ্যামল কুমার রায় ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন উত্তম কুমার চক্রবর্তী। এ সময় আয়োজনে দলের অন্যান্য সদস্য ও বিভিন্ন বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
‘জয় বাংলা, জয় জনতা’ প্রতিপাদ্যে রাজনৈতিক এ দলটির আত্মপ্রকাশ আয়োজনে বক্তারা বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, অর্থনীতি স্বাধীন নয়। বাংলার হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আমরা সবাই বাঙালি। এ ঐতিহাসিক জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমাদের নতুন পথচলা। আমরা আশা করি বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রগতিমনা ও অসাম্প্রদায়িকভাবে এগিয়ে নিতে পারব।
নতুন এ দলটির ইশতেহারগুলো হলো- মহান জাতীয় সংসদে মাইনরিটি জনগোষ্ঠীর যথাযথ অংশীদারিত্ব ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুক্ত নির্বাচন ব্যবস্থায় সার্বজনীন ভোটের মাধ্যমে দেশের মাইনরিটি অধ্যুষিত প্রতিটি সংসদীয় আসনে একটি করে সংসদ সদস্যপদ সংরক্ষিত করা, স্থানীয় সরকার প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তরসহ সব পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিটি কাঠামোতে ২০ শতাংশ মাইনরিটি আসন সংরক্ষণ করা, ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করে উক্ত মন্ত্রণালয়ে উল্লেখিত মাইনরিটিদের মধ্য থেকে একজন পূর্ণমন্ত্রী ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ট্রাস্টসমূহকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তরিত করা।
এছাড়া পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতার স্থায়ী সমাধান করা, বাংলাদেশে বিদ্যমান সব ধর্মীয় মতবাদ/সম্প্রদায়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা, মাইনরিটি নির্যাতন প্রতিরোধে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন ও তা কার্যকর করা, বর্ণ বৈষম্যগত কারণে সমাজের পিছিয়ে পড়া নৃ-গোষ্ঠী অবহেলিত জনগণের সামগ্রিক কল্যাণে সব প্রকার সামাজিক বৈষম্য নিরসনে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রমের সব পর্যায়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতিফলনপূর্বক পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও পাঠদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে মেধা ও জ্ঞানভিত্তিক রাজনৈতিক ধারা প্রবর্তন করা, মাইনরিটি জনগোষ্ঠীর দেশত্যাগ প্রবণতা রোধকল্পে সর্বাত্মকভাবে এ সংগঠন কাজ করে যাবে।
সর্বোপরি ১৯৭২ সালের মূল সংবিধান পুনর্বহাল ও তা সংরক্ষণে মাইনরিটি পিপলস পার্টি সর্বদা সোচ্চার থাকবে বলে জানানো হয়। এছাড়া আগামী নির্বাচনে এ দলটি অংশগ্রহণ করবে বলেও জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২২
এইচএমএস/আরবি