ঢাকা, রবিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপির সাংঘর্ষিক রাজনীতির অবসান প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২
বিএনপির সাংঘর্ষিক রাজনীতির অবসান প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা: বিএনপির সবকিছুতেই না বলা ও সাংঘর্ষিক রাজনীতির অবসান হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ-বিএসপি আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, যেখানে না বলা দরকার অবশ্যই সেখানে না বলবে। কিন্তু সবকিছুতেই না বলা আর সবসময় সাংঘর্ষিক রাজনীতি করা দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে। যেটি বিএনপি করছে। আমি আশা করবো সাংঘর্ষিক রাজনীতি আর না বলার রাজনীতি থেকে বিএনপি নিজেকে মুক্ত করবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি বলেছেন সমমনা দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলনে নামবেন। কদিন আগে উনিই বলেছেন, উনারা আন্দোলনে আছেন, আবার এখন বলছেন নামবেন। এখন কোনটা সঠিক সেটা বোঝা মুশকিল।

গত সাড়ে ১৩ বছর ধরে আমরা শুনছি উনারা আন্দোলনে নামবেন। আর উনাদের আন্দোলন মানে হচ্ছে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা, গাড়িঘোড়া ভাংচুর, নিজেরা নিজেরা মারামারি করা, পুলিশের ওপর হামলা করা। এবার যদি এগুলো করা হয় তাহলে জনগণ তাদেরকে প্রতিহত করবে এবং আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে থাকবে।

সংবাদপত্র পরিষদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে সাড়ে ১২০০ পত্রিকা। অথচ পশ্চিমবঙ্গে এতো পত্রিকা নাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদপত্র বান্ধব, সাংবাদিকবান্ধব; সেকারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক পত্রিকার ডিক্লারেশন আছে কাগজে; কিন্তু সেগুলো নিয়মিত বের হয় না। যেদিন বিজ্ঞাপন পায় সেদিন বের হয়। অনেক পত্রিকার যিনি সম্পাদক, তিনিই রিপোর্টার। অনেক পত্রিকায় দেখা যায়, সাংবাদিক নিয়োগ দেওয়া হয় কিন্তু তাদেরকে বেতন দেয়া হয় না। বলা হয় তোমার বেতন তুমি সংগ্রহ করো।

যে সমস্ত পত্রিকা নিয়মিত বের হয় না সেগুলো আমরা সরকারের পক্ষ থেকে চিহ্নিত করেছি। সাংবাদিক এবং প্রকাশকদেরও দাবি ছিল, পত্রিকা প্রকাশে অনিয়মের জন্য যাতে গণমাধ্যমে বদনাম না হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই চারশো’র বেশি পত্রিকা চিহ্নিত করা হয়েছে, তারমধ্যে দুইশ পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তবে কেউ যদি সংশোধন হতে চায় তাহলে সে সুযোগ থাকবে।

জাতীয় দিবসগুলো ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দিবসে পত্রিকায় ছাপানোর জন্য ক্রোড়পত্র প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, বৈশ্বিক যে অবস্থা বিরাজমান সেটি আপনারা জানেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দসীমার কথাও আপনারা জানেন। কোনো কোনো বড় পত্রিকার ১০-১২ কোটি টাকা বিলও বকেয়া রয়েছে। অবশ্য সরকারি বকেয়া বিল আজ হোক, কাল হোক অবশ্যই পাবেন। কিন্তু আগের মতো যথেচ্ছভাবে ক্রোড়পত্র দেওয়ার সুযোগ আর নেই।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গণমাধ্যমের কাজ মানুষের কাছে শুধু সংবাদ পরিবেশন করাই নয়; সমাজ ও জাতিকে পথ দেখানো, এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আর সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে হয়। মানুষ যদি স্বপ্ন না দেখে, যদি শুধু হতাশা দেখে, আশা না থাকে, সে এগিয়ে যেতে পারে না। সংবাদপত্র যদি ভালো সংবাদগুলো ভালো করে ছাপায় তাহলে জাতি স্বপ্ন দেখবে, আশা থাকবে। দেশের সাফল্য, দেশ বদলে যাওয়ার কাহিনী, বিশ্ব কি বলছে, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, জাতিসংঘ কি বলছে, সেগুলো যদি আমরা সঠিকভাবে মানুষকে জানাই, মানুষ আশাবাদী হবে, স্বপ্ন দেখবে। সমাজে সমালোচনা থাকতে হবে, সমালোচনা তারই হবে যে দায়িত্বে থাকে, কিন্তু একই সাথে ভালো কাজের প্রশংসাও থাকতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী এবং প্রেস কাউন্সিলের সদস্যরা। দৈনিক প্রভাত’র সম্পাদক মোজাফফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক এবং সচিব মো. শাহ আলম, গণযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. জসীম উদ্দিন, বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ জালাল, সাধারণ সম্পাদক এম জি কিবরিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুর বারী মঞ্জু সভায় বক্তব্য দেন।

পরে বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং এর সংস্থাগুলোর মনোনীত কর্মচারীদের হাতে ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কার তুলে দেন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- দপ্তরে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া, মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ কাউসার আহাম্মদ, আইন কর্মকর্তা মো. সাঈদুর রহমান গাজী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো. রেজাউল করিম ও অফিস সহায়ক মোসাম্মদ সেলিনা বেগম।

তাদের হাতে শুদ্ধাচার পুরস্কারের সনদ, ক্রেস্ট ও একমাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ তুলে দেন মন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন, তিন অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ, খাদিজা বেগম এবং ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২
জিসিজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।