টাঙ্গাইল: মির্জাপুর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শামীম আল মামুনের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল ও মাদক বিক্রিসহ অবৈধ বিভিন্ন উৎস থেকে অর্জিত সম্পত্তির খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এরই মধ্যে জেলা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান স্বাক্ষরিত জেলার সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে পাঠানো চিঠিতে যুবলীগ নেতা শামীম, তার স্ত্রী আঁখি আক্তার, ছেলে ওয়াফী আল আইয়ান ও মেয়ে শাইরা শামীম রাফার নামে কি পরিমাণ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পত্তি রয়েছে, তার তথ্য চাওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এক সময়ের ছাত্রদল নেতা শামীম আল মামুন ১৯৯৫ সালে ছাত্রলীগে যোগ দেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শামীম আল মামুন রাতারাতি হয়ে যান সাবেক সংসদ সদস্য একাব্বর হোসেনের এপিএস। এরপর থেকে শুরু হয় তার একচ্ছত্র আধিপত্য। শুরু করেন বেপরোয়া চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড। শামীমের বাবার নামে গ্রামের বাড়ি মির্জাপুরের পোস্টকামুরী গ্রামে এক সময় মাত্র পাঁচ শতাংশ জমি থাকলেও বর্তমানে শামীমের রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও বিলাসবহুল গাড়ি।
২০০৭ সালে চন্দ্রবিন্দু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক অনন্ত দাস নামে এক ব্যক্তির কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন শামীম। পরে বিষয়টি র্যাবকে জানান অনন্ত। পরে গোপনে র্যাব সদস্যরা ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উপস্থিত হয়ে হাতেনাতে চাঁদার টাকাসহ শামীম ও তার সহযোগীদের আটক করে। পরে এ ঘটনায় অনন্ত দাস বাদী হয়ে ২০০৮ একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন। মামলায় শামীমকে সাত নম্বর আসামি করা হয়। ২৬ দিন কারাগারে থাকার পর জামিনে বের হয়ে বাদীকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলাটি আপস করতে অনন্তকে বাধ্য করেন শামীম। মামলা আপসের পরপরই শামীমের ভয়ে এলাকা ছেড়ে সপরিবারে চলে যান অনন্ত দাস।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শামীম আল মামুন বলেন, আগেও দুদক এমন তথ্য চেয়ে অনুসন্ধান করেছে। আয়কর রিটার্ন দাখিল করি নিয়মিত। তার বাইরে যদি কোনো সম্পত্তি পায়, তাহলে তারা তদন্ত করুক। মূলত রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করার জন্য এসব করা হচ্ছে। আগে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলাম বলে এসব করা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে।
জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান জানান, যুবলীগ নেতা, তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের সম্পত্তি নিয়ে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
এসআই