নাটোর: নাটোরের নলডাঙ্গায় ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলিম জীবন হত্যার ঘটনায় জেলা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নীরব ভূমিকা পালন করাসহ নানা কারণে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন খন্দকার নাসির উদ্দিন নয়ন।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা জীবনের মরদেহ দাফনের পর নিজের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর একটি চিঠি পাঠান নাসির উদ্দিন নয়ন।
তিনি দীর্ঘ এক যুগ ধরে নলডাঙ্গা পৌর ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। নয়ন নিজেই এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে অব্যাহতি চেয়ে পাঠানো চিঠিতে ছাত্রলীগ নেতা নাসির উদ্দিন নয়ন উল্লেখ করেছেন, প্রায় এক যুগ ধরে নলডাঙ্গা পৌর ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। এসএসসি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত প্রথম শ্রেণিতে পাস করে নলডাঙ্গা পৌরসভায় মাস্টারোলে চাকরি করলেও তা স্থায়ী হয়নি। এ নিয়ে মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
এছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপট ও দলীয় কোন্দলসহ নানা সমস্যার কারণে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নির্যাতিত হচ্ছেন, যার বড় প্রমাণ ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলিম জীবন হত্যাকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ড ঘটলেও জেলা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নীরব ভূমিকা পালক করছে। এসব নিয়ে তিনি হতাশ এবং ক্ষুদ্ধ। তাই তার পক্ষে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।
নাসির উদ্দিন নয়ন বাংলানিউজকে বলেন, একজন ছাত্রলীগ নেতা খুন হলেন, অথচ জেলা বা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতারা চুপ। েএ বিষয়টি আমাকে হতবাক করেছে। আমি নিজেও সাংগঠনিকভাবে কিছু করতে পারিনি, কারণ দলীয় হাইকমান্ড থেকে তাকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, যেখানে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা হবে, নির্যাতিত হবে, অথচ কিছু করা যাবে না, সেখানে নিজের না থাকাটাই শ্রেয়। এজন্য সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে জীবন হত্যাকাণ্ড নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কিছুটা সোচ্চার আছেন বলে দাবি করেন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের নানা অপকর্ম নিয়ে ফেসবুক লাইভে তথ্য তুলে ধরে প্রতিকার চেয়েছিলেন ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলিম জীবন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন উপজেলা চেয়ারম্যান। একপর্যায়ে ওই ঘটনার জেরে জীবন ও তার বাবাকে পিটিয়ে আহত করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদ ও তার ভাইয়েরা। আর এ ঘটনার তিনদিন পর শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা জীবন মারা যান।
এ ঘটনায় জীবনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদকে প্রধান আসামি করে তার দুই ভাই ও অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ/ছয়জনকে আসামি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা রুজু করেন। ওই মামলাটি পরে হত্যা মামলায় পরিবর্তন করা হয়। এ ঘটনায় আসাদ চেয়ারম্যানের ছোট ভাই আলিম আল রাজি শাহকে আটক করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
মামলার প্রধান আসামিসহ সব আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২
এসআই