ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

রাজনীতি

মহিলা আওয়ামী লীগের পদে সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২২
মহিলা আওয়ামী লীগের পদে সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা! অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষিকা রাধা রানী ভৌমিক

ফরিদপুর: ফরিদপুরে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্য পদ পেয়েছেন মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ছকড়িকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাধা রানী ভৌমিক। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ওই কমিটিতে ৫৫ নম্বর সদস্য হিসেবে তার নাম রয়েছে।

এদিকে একটি রাজনৈতিক দলের পদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার পদপ্রাপ্তির খবরে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্ব পালন করেন সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকরা। এমন একজনকে এভাবে দলভুক্তকরণে তার নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-১৯৭৯ বিধি ২৫ এ উল্লেখ রয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গ সংগঠনের সদস্য হতে বা কোনোভাবে যুক্ত থাকতে পারবেন না। বাংলাদেশে অথবা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বা কোনো প্রকার সহযোগিতা করতে পারবেন না।

জানা গেছে, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলোচিত সরকারি প্রধান শিক্ষিকা রাধা রানী ভৌমিকের স্বামীর নাম বলরাম ভৌমিক। মধুখালীর পৌর এলাকার গাড়াখোলা মহল্লার বাড়িতেই থাকেন তিনি। এক সন্তান রয়েছে তাদের।   প্রায় ২০ বছর ধরে শিক্ষকতার চাকরি করেন রাধা রানী। সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি শুরু করে পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষিকা হয়েছেন। দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি স্কুল ফেলে বেশিরভাগ সময়েই রাজনীতির পেছনে সময় দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃকের কর্মী হিসেবে ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে।

এ ব্যাপারে রাধা রানী বলেন, আমি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তবে, এই পদের জন্য নিজে কোনো আবেদন করিনি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকার চাকরি করে এই পদে থাকা যাবে কিনা আসলে সেটি আমার জানা নেই। তবে আপনি যদি বলেন তাহলে আমি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে জানতে চাইব আসলেই এই পদে থেকে রাজনৈতিক দল করা যায় কিনা।


আর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদা বেগম বলেন, রাধা রানী যখন থেকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন, তখন স্কুলটি বেসরকারি ছিল। সদ্য গঠিত কমিটি গঠনের অনেক বছর আগেই স্কুলটি সরকারি হয়েছে উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, আসলে এটি কেন্দ্র থেকে করা হয়েছে। তবে, তিনি আমাদের মিটিং মিছিলে অংশ নেন না।

এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। একজন সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন না। সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেবেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি তো হাইকোর্ট না যে ব্যবস্থা নেব। ’

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।