লক্ষ্মীপুর: আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, দুই জঙ্গিকে আদালত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। বিএনপির মহাসচিব ফখরুল খুব খুঁচিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, হাওয়া ভবনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে ১২৫টি ছোট-বড় জঙ্গি সংগঠনের সৃষ্টি হয়েছিল। এটি আমার বক্তব্য নয়- বিবিসির খবরে এসেছে। সেখানে উল্লেখ ছিল- হাওয়া ভবনের সঙ্গে জঙ্গিদের সম্পৃক্ততা ছিল।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
হানিফ বলেন, বিএনপি এ দেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র বানিয়েছে। শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলা ভাইসহ অজস্র জঙ্গি সংগঠন আপনারা বানিয়েছেন। দেশকে জঙ্গিদের চারণভূমি বানিয়েছেন। সে সময়টাতে এখন আপনারা ফিরে যেতে চান। বাংলাদেশের মানুষ এ দেশকে আর ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায় না। জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, তারেক রহমান এখন বিএনপির আদর্শিক নেতা। তারেক দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এখন পলাতক। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে হত্যা, খুন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টির একাধিক মামলা রয়েছে। ২০০৪ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য তিনি গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলেন।
হানিফ বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তারেক রহমান এশিয়া মহাদেশের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে দুবাইতে বৈঠকে বসেছিলেন, সেই ছবি আছে। তারেক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের জনক। তিনি যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন, এ দেশকে জঙ্গিবাদের চারণভূমি বানাবেন। এ দেশ তালেবান-জঙ্গিবাদের দেশ হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছি। এই কারণে কোনো আন্দোলন দিয়ে আমাদের দমানো যাবে না। এর শেকড় বাংলার মাটির অনেক গভীরে। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল। এই দলকে বিএনপি বা অন্য কোনো অপশক্তি পতন ঘটাতে পারবে না। আপনারা ঐক্যবদ্ধ ঐক্যবদ্ধ থাকুন। আগামী সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার সরকারকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।
বিএনপির উদ্দেশে হানিফ বলেন, বলেন, আপনারা (বিএনপি) রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। আপনাদের কী অর্জন ছিল? ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আপনাদের অর্জন কিছুই নেই। দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে শীর্ষ রাস্ট্র বানিয়েছেন। তারেক রহমান দুর্নীতি ও সন্ত্রাস করে এ দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। তাদের সময় এদেশের অর্থনীতিতে ধস নামে। তখন বাংলাদেশের ছিল চরম ব্যর্থ ও দরিদ্র দেশ। মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলারের নিচে। আপনারা এখন দেশকে সে সময়ে নিয়ে যেতে চান।
বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনপ্রিয়তা আছে কি না, তা যাচাই করার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিন। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সংবিধানের মধ্যে থেকে আপনাদের নির্বাচনে আসতে হবে। আপনাদের স্বাগত জানাব। আর সংবিধানের বাইরে গিয়ে যদি আপনারা নির্বাচনের বাহিরে থাকেন, সে দায়ভার আপনাদের। আসুন, আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে যাবে এ দেশের মানুষ কাদের পক্ষে। একটি জরিপে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার ৮০ শতাংশ জনপ্রিয়তা আছে। ইনশাআল্লাহ আমরা আগামী নির্বাচনে আবারও জয়ী হব।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, দেশে দুই ধারার রাজনীতি চলছে। একটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, যার হাত ধরে দেশ অন্ধকার থেকে আলোতে এসেছে। আরেকটি ৭১ এর পরাজিত শক্তি। রাজাকার, আলবদর, ৭৫ এর খুনি ও তাদের দোসর বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে অপশক্তি। যারা দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে। এ দেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
হানিফ বলেন, আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে উন্নত করছি। আর বিএনপি-জামায়াত দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের স্লোগান- টেক ব্যাক বাংলাদেশ। এর মানে দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
আরএইচ