ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নৌকা মার্কায় লাখো জনতার ভোটের ওয়াদা নিলেন শেখ হাসিনা

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
নৌকা মার্কায় লাখো জনতার ভোটের ওয়াদা নিলেন শেখ হাসিনা ছবি: ফোকাস বাংলা

যশোর: আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় আনতে নৌকা মার্কায় লাখো জনতার ভোটের ওয়াদা নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে যশোর জেলা স্টেডিয়াম মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন সরকার প্রধান।

সেখানেই উপস্থিত জনতার ওয়াদা নেন তিনি। এ সময় বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির ব্যাপারে নানা সমালোচনা করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে লুটপাট করে খেয়েছে। তাদের কোনো গুজবে কান দেবেন না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতা গঠন করে, তখন বিএনপি রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। পরে আবারও বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকেছে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করেছি তখন পেয়েছি ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ, সেটা করোনাকালেও ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নত করতে পেরেছি।

করোনাভাইরাস মহামারি পরবর্তী বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলায় ভ্যাকসিন ক্রয়, সারে ভর্তুকি, চাল-গম-ভুট্টা ক্রয়, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে জনগণের জন্যে দুই হাতে খরচ করেছি, এটা অন্য কোথাও যায়নি। এখনও অনেক কাজ করছি, প্রণোদনা-ভর্তুকি দিচ্ছি।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে খুন-গুম, অত্যাচার-নির্যাতন-মামলা ব্যতীত জনগণকে কিছুই দিতে পারেনি। তাদের আমলে মাথাপিছু আয় ছিল ৩৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা আমরা ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি।

এ সময় সমাবেস্থলে আগত লাখো জনতাকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার ওয়াদা চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই- আগামী নির্বাচনেও আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দেবেন। দেবেন কিনা? আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন।

সরকার প্রধানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে উপস্থিত জনতা সমস্বরে চিৎকার করে ‘ভোট দেব’ বলে ওয়াদা করেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের জবাবে সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

এ সময় যশোরের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ যশোর স্টেডিয়াম ভেঙে নতুন ১১ স্তর বিশিষ্ট গ্যালারি তৈরি করে দেওয়া হবে। তাই তরুণ সমাজকে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা ও লেখাপড়ায় মনোনিবেশের আহ্বান জানান তিনি। আরও বলেন, যুব সমাজ আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎ। ফলে মাদক, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস থেকে দূরে থাকতে হবে।

সমাবেশে নিজের নানা শেখ জহুরুল হককে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমার নানা চাকরিসূত্রে যশোরেই থাকতেন। মৃত্যুর পরে তাকে যশোরেই দাফন করা হয়েছিল।   তার স্মৃতিতে তার নামেই দারিদ্র বিমোচনে একটি ট্রেনিং সেন্টার করা হবে যশোরে। এ জন্য ৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগ প্রধান। আরও বলেন, কাজ শেষ হলে এটি দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখবে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে স্বাধীন বাংলার শত্রু মুক্ত প্রথম জেলা যশোরেই আমার প্রথম জনসভা। এতে আমি আনন্দিত। আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) জনগণের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি সব হারিয়েছিলাম, বিচার চাওয়ার অধিকারও ছিল না। তবে, আপনাদের জন্য ফিরে এসেছিলাম। এখন জনগণের ভাগ্য গড়াই আমার কাজ। আমার যতোটুকু সাধ্য আছে তা দিয়েই আপনাদের পাশে থেকে সেবা করে যাবো।

এ সময় আবেগপ্রবণ হয়ে তিনি বলেন, বার বার আমাকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। সাতক্ষীরার কলারোয়াতেও আমার গাড়ি বহরে আক্রমণ হলো, বেঁচে গেছি। পরে গ্রেনেড হামলা হল; তখনও প্রাণে বেঁচে গেছি। জানি না মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে বারবার আঘাত থেকে বাঁচিয়ে দিচ্ছেন! হয়তো আমার ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন বাংলার জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করার। ফলে জীবনের সব সাধ্য দিয়েই জনগণের পাশে থাকবো। আগামীর বাংলাদেশে মানুষের জীবন মান উন্নত হবে, সমৃদ্ধশালী হবে। আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
ইউজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।