ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বাখরাবাদ-সিদ্ধিরগঞ্জ গ্যাস লাইন

নির্মাণকাল কমায় ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১১ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০১২
নির্মাণকাল কমায় ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা

ঢাকা : বাখরাবাদ-সিদ্ধিরগঞ্জ গ্যাস সঞ্চালন লাইন নিমার্ণ কাজের সময় ছয় মাস কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এতে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নির্মাণাধীন হরিপুর ৪১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতেই সময় এগিয়ে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লি. (জিটিসিএল) সূত্র জানিয়েছে, সময় এগিয়ে আনার কারণে এখন সব ধরনের মালামাল বিমানে আনতে হবে। এতে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে বাড়তি খরচ পড়বে।

বাখরাবাদ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ পর্যন্ত ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৬০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণে ব্যয় হবে সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকা। প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক। ৬০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন এলাকায় রয়েছে ৬টি ছোট বড় রিভার ক্রসিং।
 
সিমেন্টিং করে রিভার ক্রসিং করার কথা। কিন্তু সময় এগিয়ে নেওয়ায় সিমেন্টিং করে রিভার ক্রসিং করা সম্ভব নয়। বালির বস্তা ফেলে করতে হবে। এতে করে পরবর্তীতে পাইপলাইনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।

এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, অল্প সময়ের মধ্যে এ পাইপ লাইনের কাজটি করতে হলে ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কাজের মান নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর সময় এগিয়ে আনার কথা স্বীকার করে বলেছেন, দ্রুত করতে গেলে খরচ বেড়ে যেতে পারে।

পেট্রোবাংলা অভিযোগ করেছে, গ্যাস সংকট থাকলেও বিদ্যুৎ বিভাগ একের পর এক গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ চুক্তি করে যাচ্ছে। এসব কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে গ্যাসের একক বিক্রেতা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার কোনো মতামত নেওয়া হচ্ছে না।

বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২৬ জুন বিদ্যুৎ বিভাগের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জ্বালানী উপদেষ্টা হরিপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ করতে বাখরাবাদ-সিদ্ধিরগঞ্জ সঞ্চালন লাইন নিমার্ণ কাজ ছয় মাস এগিয়ে আনার প্রস্তাব করেন। ওই বৈঠকে উপদেষ্টার এমন প্রস্তাবের বিষয়ে আপত্তি উঠলেও শেষ পর্যন্ত সময় এগিয়ে আনা হয়।

বৈঠকে আগামী বছরের মধ্যে ১৩শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবু তাহেরকে প্রধান করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সময় এগিয়ে আনা সঠিক কাজ হয়নি। ওই কর্মকর্তা দাবি করেন, পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কে অনেকটাই চিড় ধরেছে। এ অবস্থায় এই ইস্যুতে নতুন করে সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটতে পারে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, তিন হাজার ৫শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে হরিপুর ৪১২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ইলেকট্রিক জেনারেশন কোম্পানি। এতে অর্থায়ন করছে জাপানি দাতা সংস্থা জাইকা।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি জানুয়ারি মাসে কমিশনিং হবে। পরে তিনমাস টেস্ট রানে চলবে। কেন্দ্রটিতে দৈনিক ৬৪  মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১২
ইএস/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।