ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সব কারখানায় গ্যাস দেওয়া সম্ভব নয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৩
সব কারখানায় গ্যাস দেওয়া সম্ভব নয়

ঢাকা: সব কারখানায় গ্যাস ও ক্যাপটিভ পাওয়ার দেওয়া সম্ভব নয়। তাই শিল্প উদ্যোক্তাদের বিকল্প ভাবার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই-ইলাহী চৌধুরী।


 
রোববার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে প্রধান চ্যালেঞ্জ প্রাথমিক জ্বালানি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এনার্জি বিষয়ক সাপ্তাহিক ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’ তাদের দশম বর্ষপূতি উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
 
শিল্প মালিকদের বিকল্প ভাবার অনুরোধ জানালেও কি বিকল্প হতে পারে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি জ্বালানি উপদেষ্টা।
 
তৌফিক ই- ইলাহী বলেন, জ্বালানি খাতের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে প্রাথমিক জ্বালানি। এর থেকে উত্তরণে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে সফলও হয়েছে।
 
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সমালোচনার জবাবে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, কয়লা কোথা থেকে আসবে? বিপদ আছে জেনেও বসে থাকবো, তাতো হতে পারে না।
 
দেশের খনিগুলোতে কয়লা উত্তোলনের উদ্যোগ না নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়টি খুবই জটিল বিষয়। আমরা বিশেষজ্ঞদের মতামত চেয়েছি। তাদের মতামত পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
যতোদিন দেশিয় কয়লা উত্তোলন না হচ্ছে, ততোদিন আমদানি করা কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে বলেও জানান জ্বালানি উপদেষ্টা।
 
সরকার তেল-গ্যাস অনুসন্ধ্যানে জোর দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী শীত মৌসুমে অগভীর সমুদ্রে ৩টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ শুরু হবে। ২টি বিদেশি কোম্পানি এ কাজ করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ম. তামিম বলেন, জ্বালানি খাতের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে প্রাথমিক জ্বালানি ও অর্থায়ন। স্বাধীনতা পরবর্তী ৪২ বছরে গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছে মাত্র ৩.৩৭ টিসিএফ। যা মোটেই সন্তোষজনক নয়।

তেল-গ্যাস অনুসন্ধ্যান ও উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার করা দরকার বলেও মত দেন তিনি।

কয়লার বিষয়ে দেশে বিশেষজ্ঞ নেই। যারা পক্ষে বলছেন, তারা না বুঝেই বলছেন। আর যারা বিপক্ষে বলছেন, তারা একটি অবস্থান থেকে বিরোধিতা করছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ দিয়ে সমীক্ষা করারও দাবি জানান ম. তামিম।

গ্যাস সংকট থেকে বের হয়ে আসার জন্য আবাসিকের গ্যাসের দাম বাড়ানো উচিত। আর এ খাত থেকে প্রাপ্ত বাড়তি অর্থ এলপিজিতে ভর্তুকি দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

আরেক বিশেষ অতিথি সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ খাতে চরম সমন্বয়হীনতা রয়েছে। একই সঙ্গে উদ্যোগ ও মনিটরিংয়েও ঘাটতি রয়েছে। কথা বলার মাধ্যমে দায়িত্ব শেষ করেন অনেকে।

জ্বালানি খাতের সংকট নিরসনে আঞ্চলিক সহযোগিতার বৃদ্ধি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এর জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা প্রয়োজন। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়েছে বিমানে। এই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিয়ে সম্ভব নয়।

জ্বালানি খাতের উন্নয়নে জাতীয় ঐক্যমত প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম।

পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, ফুলবাড়ীর কয়লা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে হবে না আন্ডারগ্রাউন্ড পদ্ধতিতে হবে তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু খালাশপীর, দিঘীপাড়া ও জামালগঞ্জ কয়লাখনি তো আন্ডারগ্রাউন্ড মাইনিং করতে হবে। তাহলে এগুলোর কাজ করা হচ্ছে না কেন?

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুব উল আলম বলেন, গ্যাস সংযোগের অভাবে চট্টগ্রামে ৩ হাজার কোটি টাকার মেশিনারিজ বসে আছে। এগুলো চালু হলে বিশাল কর্মসংস্থান তৈরি হতো।

২০০৮ সালে চট্টগ্রামে দৈনিক গ্যাস সরবরাহ করা হতো ২০০ থেকে ২২০ মিলিয়ন ঘনফুট। বতর্মানে গ্যাসের উৎপাদন প্রায় ৫শ’ মিলিয়ন ঘনফুট বাড়লেও চট্টগ্রামে সরবরাহ কমিয়ে  দেওয়া হয়েছে। এখন চট্টগ্রাম পাচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট।

এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার পত্রিকার সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ইমদাদুল হক।

বক্তব্য রাখেন পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ খন্দকার আব্দুস সালেক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৩/ আপডেটেড: ১৬১৫ ঘণ্টা
ইএস/এএইচএস/এএসআর/আরকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।