ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

‘লোড শেডিং নয়, লোড শেয়ার করছি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
‘লোড শেডিং নয়, লোড শেয়ার করছি’ লোড শেডিং নয়, লোড শেয়ার করছি

ঢাকা: সরকার বিদ্যুতের লোড শেডিং নয়, লোড শেয়ার করছে বলে দাবি করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

চলতি গ্রীষ্ম মৌসুম এবং আসন্ন রমজান মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বিকেলে বিদ্যুৎ ভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে জানান প্রতিমন্ত্রী।
 
বিভিন্ন জায়গায় লোড শেডিং হওয়ার পরও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ওয়বেসাইটে লোড শেডিং ‘জিরো’ থাকার তথ্য নিয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক।

 
 
এর উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি তো বলব লোড শেডিং না, লোড শেয়ারিং করতেছি। যার কারণে বলা যায় না (লোড শেডিং)। কারণ হলো কয়টা দিন যা হয়েছে আমরা লোড শেয়ার করেছি। লোড শেড, বিদ্যুতের জেনারেশনের যদি অবস্থাই না থাকে এবং সেই অবস্থা থেকে আমরা কিন্তু এক জায়গার লোড আর এক জায়গায় শেয়ার করেছি স্বাভাবিকভাবে।  
 
লোড শেডিং ও লোড শেয়ারিংয়ের পার্থক্য জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাইজ অ্যাডজাস্টমেন্ট আর প্রাইজ বাড়ার মধ্যে যে পার্থক্য।
 
পরিস্থিতি শনিবারের মধ্যে ভাল অবস্থায় আসবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের চাহিদা ১০ হাজার ৭০০ থেকে ১০ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। আমরা আশা করছি শনিবার নাগাদ সে জায়গায় পৌঁছে যাব।
 
বেসরকারি খাতের পাওয়ার প্লান্টগুলো সময়মত রক্ষণাবেক্ষণ না করায় গত ৭-১০ দিনে সমস্যা দেখা গেছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
 
‘প্রাইভেট সেক্টরে যে পাওয়ার প্লান্টগুলো ছিল, তাদের বলা হয়েছিল শীতকালীন সার্ভিসিংয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা সেই সময়ে চালু রেখেছেন। এই মুহূর্তে রমজানকে সামনে রেখে সার্ভিসিং পিরিয়ডের টার্গেট ঠিক করেছেন। কয়েকটা পাওয়ার প্লান্ট এই সময়ে সার্ভিসিং হবে। ’
 
বেসরকারি পাওয়ার প্লান্টগুলো কি কথা শুনছে না- প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি সেটা বলছি না। পরিস্থিতির কারণে মাঝে মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমি মনে করি পরিস্থিতির কারণে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  
 
কিসের ভিত্তিতে শনিবার ডেটলাইন দিচ্ছেন- প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের গ্যাসের স্বল্পতা রয়েছে। আমরা কাফকো, শাহজালাল সার কারখানা বন্ধ করে দিয়েছি। সেটার ইফেক্ট আসতে আসতে হয়তো আরও দু’দিন সময় লাগবে। শনিবার হয়তো আমরা পাওয়ারে গ্যাসের অভাব পূরণ করতে পারব। গ্যাসের অভাব কিছুটা পূরণ হবে, সার্ভিসিংয়ে যে পাওয়ার প্লান্ট সেগুলো চালু হবে, সব মিলিয়ে ১০ হাজার মেগাওয়াটের মত পাব।  
 
টাওয়ার পড়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরে পড়ে গেছে। এখন তো বলতে পারব না- এটা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। এটা স্বাভাবিক। তদন্তের একই অবস্থা- টাওয়ার পড়ে গেছে।  
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব চেয়ে বড় সমস্যা গ্যাসের স্বল্পতা এবং একটা টাওয়ারের। টাওয়ারটা পড়ে যাওয়ার কারণে দুই দিকের পাওয়ার প্লান্ট বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট গ্যাপ হয়ে গেছে। দু’টো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।  
 
ট্রান্সমিশন লাইন ১২ হাজারের উপরে নেওয়ার মত ক্যাপাসিটি থাকলেও নয় হাজার ক্রস করছে না কেন- প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের রিজার্ভ রাখতে হয়। একটা ব্লাকআউট হয়েছিল। পুরো লোডের উপর রাখলে গ্রিড আউট হয়ে যাবে। এজন্য হাতে ১০ শতাংশ রাখতে হয়।  
 
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিমাসে ৯০০-১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হচ্ছে। আমাদের রিজার্ভ ভোল্ট রাখতে হবে অনেক বেশি। যেভাবে বাড়ছে দেখা যাবে ৩০ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদা। এখন চিন্তা করছি আরও কিছু বড় পাওয়ার প্লান্ট আগামী ৩/৪ বছরে আনা যায় কিভাবে। কয়লায় যে ১০ হাজার মেগাওয়াট আসার কথা ছিল সেখানে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট। এ কারণে হয়তো এলএনজিতে যাব আগামী বছর জুন থেকে।  
 
নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে আরও তিন বছর সময় লাগবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।  
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।