ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

জানুয়ারিতেই রাজশাহীতে গ্যাস সরবরাহ: পেট্রোবাংলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১২
জানুয়ারিতেই রাজশাহীতে গ্যাস সরবরাহ: পেট্রোবাংলা

ঢাকা: রাজশাহীতে গ্যাস সরবরাহের জন্য পেট্রোবাংলা প্রস্তুত। চলতি মাসের কোনও একদিন রাজশাহীতে পাইলাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর।

 

মঙ্গলবার রাজধানীর কাওরান বাজার পেট্রোসেন্টারে দেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ও ৩ বছরের সাফল্য তুলে ধরতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

ড. হোসেন মনসুর জানান, দেশের ২৪টি গ্যাসক্ষেত্রে প্রাক্কলিত (প্রমাণিত ও সম্ভাব্য) গ্যাস মজুদ রয়েছে ৯ দশমিক ৮৭ ট্রিলিয়ন কিউবিক ঘনফুট (টিসিএফ)।

বিগত ৩ বছরে গ্যাস সেক্টরে অনেক সাফল্য থাকলেও অবৈধ সংযোগ মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও তিনি জানান।  

তিনি আরও জানান, দেশে বর্তমানে ২৪টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে ১৮টি। উৎপাদনরত এসব গ্যাসক্ষেত্রের ৮১টি কূপ দিয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে।

এর মধ্যে দেশীয় কোম্পানি সমূহের ৫৪টি কূপ থেকে ১০৭৩ মিলিয়ন ঘনফুট এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানি সমূহের ২৭টি কূপ থেকে ১১৭৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করার ক্ষমতা রয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখিত উৎপাদনের বিপরীতে দৈনিক প্রায় ৪৩৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ঘাটতি রয়েছে। যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বর্তমান সরকারের আমলে দৈনিক ৫০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বেড়েছে দাবি করে প্রেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জানান, বর্তমানে আরও (দৈনিক) ১৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব। তবে পাইপ লাইন ও কম্প্রেসার সমস্যার কারণে তা উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

পাইপলাইন এবং কম্প্রেসার স্থাপনের কাজ চলছে দাবি করে তিনি বলেন, শিগগিরই বাড়তি উৎপাদন পাওয়া যাবে। উৎপাদিত গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৯২০ মিলিয়ন ঘনফুটের বিপরীতে ৭১৫ মিলিয়ন ঘনফুট, সার উৎপাদনে ২৮৯ এর বিপরীতে ২১৫ মিলিয়ন ঘনফুট, ননগ্রিড বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট।

এছাড়া নন-বাল্ক পর্যায়ে ক্যাপটিভ ৪২০ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে ৩৩১ মিলিয়ন ঘনফুট, শিল্পে ৩৯২ এর বিপরীতে ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট, গৃহস্থালীতে ২৭৩ এর রিপরীতে ২৫৮ মিলিয়ন ঘনফুট, সিএনজি স্টেশনে ৫ শতাংশ সমান ৩৯২ মিলিয়ন ঘনফুটের বিপরীতে ১১৪ মিলিয়ন ঘনফুট এবং চা বাগানসহ অন্যান্য সেক্টরে ৩১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

বিগত ৪ দলীয় জোট সরকার গ্যাস সেক্টরকে অনেকটা বিকল করে রেখেছিল উল্লেখ করে বলেন, তারা প্রথম ৩ বছরে মাত্র ২টি অনুসন্ধান কূপ খনন করেছিল। আর বর্তমান সরকার ৩ বছরে ৪টি কূপ খনন করেছে।

একইভাবে বিএনপি সরকার উন্নয়ন কূপ ১টি করেছিলো, সেখানে বর্তমান সরকার করেছে ৬টি বলে জানান তিনি।

একই সঙ্গে গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপন ও মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি থেকে এবং বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে বাড়তি উৎপাদন করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনে হঠাৎ করে প্রেট্রোবাংলার থেকে দায়িত্ব কেড়ে নিয়ে অন্যকে দেওয়ায় কাজটিতে বিলম্ব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী ২০১৩ সালের জুনের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে।

গ্যাস নিয়ে অনেক কথা বললেও তার দায়িত্বে থাকা কয়লার বিষয়ে কোনও বক্তব্য দেননি ড. মনসুর।

সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আজকে কয়লা নিয়ে কথা নয়। জ্বালানি মন্ত্রণালয় আরেকটি আয়োজন করবে সেখানে সব খাত নিয়ে অনেক আলোচনা হবে।

এর আগে গত ১ জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিভাগ বর্তমান সরকারের ৩ বছরের খতিয়ান তুলে ধরতে বিদ্যুৎ ভবনে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিল। সেখানে জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক –ই- ইলাহীও বলেছিলেন, আরেকটি অনুষ্ঠান করে কয়লা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

অনুষ্ঠানে বাপেক্সের এমডি ছাড়াও পেট্রোবাংলার পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।