ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

আগামী তিন বছরে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুতের দাম বাড়বে: অর্থমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১২
আগামী তিন বছরে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুতের দাম বাড়বে: অর্থমন্ত্রী

ঢাকা: আগামী তিন বছর পর্যায়ক্রমে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ খাত থেকে ভর্তুকিও তুলে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।



রোববার সরকারের বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে এর আওতাধীন কোম্পানি ও সংস্থাগুলোর চুক্তি স্বাক্ষর ও সার্বিক বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

সম্প্রতি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। দুটি বিকল্প ছিল তা হলো, বৈদেশিক সাহায্য এবং বাজার থেকে টাকা তোলা। বাজার থেকে টাকা তুললে মূল্যস্ফীতি তিন থেকে চারগুণ বেড়ে যেত বলেও দাবি করেন তিনি।

সভার শুরুতেই অর্থমন্ত্রী বক্তব্য রেখে চলে গেলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে দ্বি-মত পোষণ করে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারে কমলে তেলের দামও কমবে একইভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে।

দাম বাড়বে না কমবে তা আগেই কারও পক্ষে বলা সম্ভব নয় উল্লেখ করে বলেন, ‘একমাত্র মধ্যপ্রাচ্য এর গ্যারান্টি দিতে পারে। ’

কুইক রেন্টালের সমালোচনাকে অসার উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এর একমাত্র বিকল্প ছিল জনগণকে অন্ধকারে নিমজ্জিত রাখা। ’

বিদ্যুৎ খাতে সরকার ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে দাবি করে বলেন, ‘আমরা রেন্টালের পাশাপাশি স্থায়ী অনেক প্রকল্প নিয়েছি। ’

‘বর্তমান সরকারের চুক্তি করা ৪৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ২৪টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের ভিত্তিতে। ’

সরকার তার নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২০ সালে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বর্তমানে সেই লক্ষ্যমাত্রা ২৬ হাজার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে আলোচনা করুক, এটা আগে ভারত চাইত না বাংলাদেশ। এখন ভারত উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এটা বিরাট সাফল্য। ’

পুরাতন বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনুৎপাদনে রেখে উচ্চ মূল্যে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসানো হচ্ছে কেন সাংবাদিকদের এম প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এই প্রথম বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। এরই মধ্যে একটি কেন্দ্র পুনরায় উৎপাদনে গেছে। ’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকার বলেন, ‘সরকারের অনেক অর্জন রয়েছে। এর মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, শিক্ষার হার ৫৬ শতাংশে উন্নীতকরণ, দারিদ্র ৩১ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং গড় আয়ু ৭৩ বছরে উন্নীত করা। ’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের সমালোচনা করে বলেন, ‘মিডিয়ায় সরকারের খারাপটাই শুধু প্রচার করা হয়। দেশটা আমাদের সবার, তাই দেশের জন্য কিছু করুন। ’

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ বিভাগের বর্তমান পরিস্থিতি এবং আগামীর পরিকল্পনার বর্ণনা তুলে ধরে।

এর আগে বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সক্ষমতা উন্নয়ন বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। কোম্পানি সমূহের সার্বিক উন্নয়নসূচক নির্ধারণী এ চুক্তিতে সিস্টেম কমানো, বিল আদায়, সেবার মান, কর্মকর্তা কর্মচারীদের ট্রেনিংসহ ১২টি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। এই সূচকে উত্তীর্ণ কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশেষ বোনাসের জন্য বিবেচিত হবেন বলে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।