ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

তেল-গ্যাস উন্নয়নে পেট্রোবাংলা-গাজপ্রম চুক্তি অনুস্বাক্ষর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১২
তেল-গ্যাস উন্নয়নে পেট্রোবাংলা-গাজপ্রম চুক্তি অনুস্বাক্ষর

ঢাকা : তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়নে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি অনুস্বাক্ষর করেছে পেট্রোবাংলা। শুক্রবার সন্ধায় পেট্রোবাংলার হলরুমে উভয়পক্ষের মধ্যে এই অনুস্বাক্ষর হয়।

ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর।

গাজপ্রমের পক্ষে চুক্তি অনুস্বাক্ষর করেন গাজপ্রমের আইন বিভাগের প্রধান আলেকসান্ডা নিকিফোভ এবং পেট্রোবাংলার পক্ষে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় গাজপ্রমের কর্মকর্তা এমিরলনি তোরোমিরজায়েভ, পিটার অলিনিক ও আলেকসান্ডা মুজিচেকো উপস্থিত ছিলেন।
 
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গত বছর রাশিয়া সফরকালে তেল-গ্যাস খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানালে ৮ আগস্ট গাজপ্রম অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কূপ খননের প্রস্তাব দেয়।

তবে গাজপ্রমের প্রস্তাবে পারফরমেন্স গ্যারান্টি, ইন্সুরেন্স বিষয়ে কোনো বিষয় উল্লেখ ছিল না। পরে ওই মাসেই প্রস্তাবটি প্রক্রিয়াকরণ কমিটির কাছে পাঠানো হয়।

একই সঙ্গে পারফরমেন্স গ্যারান্টি ও ইন্সুরেন্স সম্পর্কে আলোচনার জন্য সুপারিশ করা হয়। বিষয়টি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান গ্যাজপ্রমের ব্যবস্থাপনা পরিচালকে পাঠানো একটি চিঠিতে জানান। গত বছরের ২০ অক্টোবর গাজপ্রম উত্তরে জানায়, পারফরমেন্স গ্যারান্টি ৫ শতাংশ এবং মোট ব্যয়ের ওপর দুই শতাংশ কমানো সম্ভব হবে।

এছাড়া ইনসুরেন্সের বিষয়ে পরে জানানো হয়, যেহেতু গ‍াজপ্রমের সকল কাজ আর্ন্তজাতিক আইন অনুসারে ইনসুরেন্স করা হয়, সেহেতু এই দশটি কূপের জন্যও একই আইন অনুসরণ করা হবে।

পরে গাজপ্রমের প্রস্তাব ২০ ডিসেম্বর ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দেয়। এর পরের দিন ২১ ডিসেম্বর পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এক চিঠিতে চুক্তি খসড়া চূড়ান্ত করার জন্য আমন্ত্রণ জানান গাজপ্রমকে।

গাজপ্রম বিভিন্ন গ্যাস ক্ষেত্রে ১০টি অনুসন্ধান ও উন্নয়ন ক‍ূপ খনন করতে ১৯৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রস্তাব দেয়।

এর আগে এত কমদামে কোনো আন্তর্জাতিক কোম্পানি বাংলাদেশে তেল-গ্যাস উন্নয়ন কূপ খনন করেনি বলে পেট্রোবাংলা দাবি করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্যাস সেক্টরে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে দাবি করেছে পেট্রোবাংলার সূত্রটি।

১০টি কূপের প্রতিটির গড় ব্যয় ধরা হয় ১৯.৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে তিতাস গ্যাসক্ষেত্রে ৪টি ও রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রে একটি উন্নয়ন কূপে মোট খরচ ধরা হয় ১০০ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এর মধ্যে তিতাস গ্যাসক্ষেত্রে উন্নয়ন কূপ করার সময়ে যে কোনো ধরণের ব্লো-আউট বা দুর্ঘটনা মোকাবেলা এবং বর্তমানে বিভিন্ন কূপে থাকা ছিদ্র চিহ্নিত করণের খরচ ধরা হয় ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্য ৫টি উন্নয়ন ক‍ূপের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

পেট্রোবাংলার পরিকল্পনা অনুযায়ী তিতাস গ্যাস ক্ষেত্রের ১৯, ২০, ২১, ২২ নং কূপ ও রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রের ৪নং কূপ উন্নয়ন করা হবে।

এছাড়া বাপেক্সের নিয়ন্ত্রণাধীন বেগমগঞ্জ, শাহাবাজপুর, শ্রীকাইল, সেমুতাং ও সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্রে ৫টি অনুসন্ধান কূপ খনন করা হবে। এই ৫টি অনুসন্ধান কূপের জন্য গাজপ্রম ৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর্থিক প্রস্তাব দিয়েছে।

চ‍ূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর পরবর্তী কার্যাদেশ প্রদানের পর থেকে ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করবে বলে গাজপ্রম প্রস্তাব দিয়েছে।
 
গ্যাস অনুসন্ধানে এবারেই প্রথম বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর আওতায় এই বাণিজ্যিক চুক্তিটি হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।