ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিএনপির আমলে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো: নসরুল হামিদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২২
বিএনপির আমলে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো: নসরুল হামিদ কথা বলছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: বিএনপির আমলে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের মানিক মিয়া অডিটোরিয়ামে মূল্য বৃদ্ধি না করে বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতের আর্থিক ঘাটতি সমন্বয়ের বিকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন এবং কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) ‘বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি (প্রস্তাবিত)’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এক নাগরিক সভায় তিনি এ কথা বলেন।



এ সময় মন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং ছিল। বিদ্যুৎ, গ্যাস নিয়ে তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল না। বর্তমানে সরকার সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছে। বর্তমানে বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে ৩০ হাজার কোটি টাকা আমরা কর দিই। আমরা মূলত দাম বাড়াচ্ছি না। সমন্বয় করছি। বিভিন্ন প্রকল্পের ডেভেলপমেন্টেই আমাদের মূল খরচ হচ্ছে। ’

তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো সার্ভে করেছি আমরা যেখানে পরবর্তীতে গ্যাস পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সমুদ্রের গভীরতা ১২০০ মিটার নিচে নেমে গেছে। ফলে এখান থেকে গ্যাস উত্তোলন অনেক সময় সাপেক্ষ হবে। দেশের ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে গ্যাসের চাহিদা বেড়েছে। বর্তমানে আমদানি এবং দেশীয় মাধ্যম হতে উত্তোলিত গ্যাসের সমন্বয় করে দেশীয় চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। ’
 
এ সময় ক্যাবের প্রস্তাবের প্রশংসা করে তিনি দেশীয় বিদ্যুৎ এবং খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য ক্যাবের কাছে বিজ্ঞানসম্মত প্রস্তাব দেওয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান।  

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে ভর্তুকি বাড়ানোর প্রস্তাব জানাই। সরকার সাধারণ জনগণের মঙ্গলে অর্থ ব্যয় করতে কার্পণ্য করবে না এটা আমাদের বিশ্বাস। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাসখাতে অমিতব্যয়িতা আছে। উন্নয়ন যেমন দরকার, সঙ্গে দরকার প্রতিটি কানাকড়ির সর্বোচ্চ ব্যবহার। মিতব্যয়িতা, সম্পদের কার্যকর ব্যবহার হলে ভর্তুকি সর্বনিম্ন করা যাবে। ’

এ সময় সমুদ্র ও অব্যবহৃত গ্যাসফিল্ড থেকে গ্যাস আহরণ করার ওপর জোর দেন তিনি।  

গোলাম রহমান বলেন, ‘জ্বালানিখাতে আমদানি নির্ভরতা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। দীর্ঘমেয়াদে গ্যাস সম্পদ উত্তলোনে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা দেখতে চাই। কয়লা উত্তোলনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া থেমে আছে, এটি বাড়াতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব কিছুর দাম বাড়ছে, মানুষের অবস্থা খারাপ। নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের আয়-রোজগার কমেছে। তারা কষ্টে আছে। তাদের কথা চিন্তা করে ভর্তুকি বাড়াতে হবে। ’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার রাজীব হায়দার।  

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতের অন্যতম সুবিধাভোগী আমরা। মিলগুলোতে ১৭০০-১৮০০ ক্যাপ্টিভ পাওয়ারের মেশিন চলছে। এ মুহূর্তে প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ। না হলে কাঁচামালের ক্ষতি হয়। জ্বালানির দাম বাড়লে এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রপ্তানিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ’

আরও বক্তব্য দেন ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম। তিনি গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যহার বৃদ্ধি না করার প্রস্তাব করেন।

ঢাবির ভূ-তত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বদরুল ইমাম আবিষ্কৃত বন্ধ গ্যাস কূপগুলো চালু করে সেগুলোকে পুনঃপরীক্ষা করে সেখান থেকে বৃহৎ আকারে উৎপাদন করার পরামর্শ দেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২২
এমকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।