ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের মতো দেশ কোথাও দেখেননি আন্না

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
বাংলাদেশের মতো দেশ কোথাও দেখেননি আন্না ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ব্রাসেলস (বেলজিয়াম) থেকে: পোল্যান্ডের নাগরিক দুদেক আন্না। বসবাস বেলজিয়াম।

আর বৈবাহিক সূত্রে চেনা-জানা বাংলাদেশ- যা তার চোখে অসাধারণ একটি দেশ।

বাংলাদেশের মানুষের মতো ভালোবাসা, আতিথেয়তা, আন্তরিকতা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে পেয়েছেন কিনা? জবাবে বলেন, সত্যিই অসাধারণ। এমন দেশ কোথাও দেখিনি। মানুষগুলোর তো তুলনাই নেই। এতো ভালো! মন চাইলেই ছুটে যাই বাংলাদেশে।

বাংলাদেশের বধূ দুদেক আন্না। পোল্যান্ডের লুবলিনের মেয়ে। আন্নার সঙ্গে কর্মসূত্রে পরিচয় ফেনীর জায়লস্কর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে শহীদুল হক লতিফের। ভাষ্য অন্বেষণে এসেছিলেন ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে। সেখানে কাজের মধ্যেই আন্নাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন সহকর্মী শহীদুল হক লতিফকে।

পরিশ্রমী,আত্মবিশ্বাসী আর প্রত্যয়ী হিসেবেই পছন্দ করেছিলেন শহীদুলকে। সে দিনের সেই সিদ্ধান্ত এতোটুকুও ভুল ছিলো না- দাম্পত্যজীবনের এতোটা পথ হেঁটে এ উপলব্ধি আন্নার।

১৯৯৩ সালে বিয়েটা সম্পন্ন করে স্বামীর সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন আন্না। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এ দম্পতিকে। একটি রেস্টুরেন্ট থেকে গ্রোসারি শপ। বাড়ি, গাড়ি, সংসার, সন্তান নিয়ে এখন সুখে ভরপুর আন্নার জীবন। বিয়ের পর অবশ্য দুদেক আন্নার নতুন নাম আন্না লতিফ।

এই দম্পত্তির ঘরে রয়েছে সাড়ে সাত বছরের এক রাজকন্যা। নাম আলিয়া লতিফ। পড়ছে ক্লাস ওয়ানে। স্থানীয় বনিফাস স্কুলে। স্বামীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছেন আন্না। ঢাকা শহর ছেড়ে ফেনীর গ্রাম ঘুরে অসাধারণ লেগেছে তার।

বাংলা কিছু কিছু বোঝেন। সেগুলো অভিব্যক্তিতে। তাই কথা হলো দোভাষীর সহায়তা নিয়ে।

বাংলানিউজকে দুদেক আন্না বলেন, সবচেয়ে মজার স্মৃতি রিকশায় চড়া, পার্কে ঘোরা। সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকতো। আমরাও বেশ উপভোগ করতাম গ্রামীণ মানুষদের সহজ সরল জীবন। মনে পড়ে রিকশায় চড়ে চালককে ১০ ইউরো দিয়েছিলাম। আমাদের খুব ভালোবেসে ফেলেছিলেন। প্রতিদিন সকালে রিকশায় চড়ানোর জন্যে চলে আসতেন। আমার শাশুড়ি থেকে আত্মীয়রা আমাকে খুবই ভালোবাসেন।

বাংলাদেশে রাস্তাঘাটে গাড়ির হর্ন শুনে কান ঝালাপালার পরিবর্তে মজাই লেগেছে তার। এতো হর্ন! এতো শব্দ।

বলেন, আমাদের এখানে কেউ হর্ন বাজালে মনে হয় হয়তো একটু বকে দিলো। খুবই অপমানজনক। ধরেন কেউ ভুল করলো ড্রাইভিং করতে গিয়ে। পাশের গাড়িটি হর্ন দিয়ে ধরিয়ে দেবে তার ভুলগুলো। বেশি শব্দে দেওয়া মানে বকা থেকে তা গালিতে রূপান্তর হওয়া। বাংলাদেশে পা রাখা মাত্রই মনে হলো এখানে মানুষ পরস্পরের সঙ্গে এতো বকাঝকা করে!

আন্না বলেন, পরে যখন শহীদ বুঝিয়ে বললো। তখন থেকেই মজা লাগা শুরু হলো। বাংলাদেশের স‍ালোয়ার কামিজ আমার ভীষণ পছন্দ। ফেরার সময় দেশ থেকে একগাদা কাপড় নিয়ে এসেছি। তবে কষ্ট বলতে মশার উৎপাত! এত্ত মশা বাংলাদেশে! তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের তুলনা বাংলাদেশ।


বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।