ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

‘দেশে বিদেশে’র আয়োজনে টরন্টো পিঠা উৎসব ও প্রতিযোগিতা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
‘দেশে বিদেশে’র আয়োজনে টরন্টো পিঠা উৎসব ও প্রতিযোগিতা ‘দেশে বিদেশে’র আয়োজনে টরন্টো পিঠা উৎসব ও প্রতিযোগিতা ২০১৯।

অসংখ্য মানুষের আগমনে অডিটোরিয়ামে তিল ধারণের জায়গা নেই। ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান, নানা বয়সের দর্শকের উপচে পড়া ভিড় সেখানে। সবাই এসেছেন নাড়ির টানে; দেশীয় পিঠা খাবেন, উৎসবের পর্বগুলো মনভরে উপভোগ করবেন বলে। আনন্দ ভাগাভাগি করা বাঙালিদের ঐতিহ্য, সেটি আবারও প্রমাণিত হলো এ আয়োজনে।

গত রোববার (২৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হলো সংবাদমাধ্যম 'দেশে বিদেশে' আয়োজিত ‘টরন্টো পিঠা উৎসব ও পিঠা প্রতিযোগিতা ২০১৯’। নগরীর রয়্যাল কানাডিয়ান লিজিয়ন হলে অনুষ্ঠিত এ উৎসবের প্রধান অতিথি ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন ডলি বেগম এমপিপি, কবি ইকবাল হাসান, ব্যবসায়ী ইকবাল রুশদ ও কানাডা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাঈনুল খান।

বিকেল ৫টায় প্রধান অতিথি কবি আসাদ চৌধুরী পিঠা উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসবের কনভেনর রিফফাত নওরিন। এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথিরা।

শিপ্রা চৌধুরী পরিচালিত আনন্দধারার শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। পুঁথি পাঠ করেন হিমাদ্রী ও মুনিমা। কবিতা আবৃত্তি করেন হোসনে আর জেমি ও দিলারা নাহার বাবু। সংগীত পরিবেশন করেন লাবণ্য তানজিলা, বীথিকা, মুক্তি প্রসাদ, ফারহানা জয়, শিরিন চৌধুরি ও নাফিয়া উর্মি। মনোমুগ্ধকর নৃত্যালেখ্য পরিবেশন করে তাপস দে-র শিক্ষার্থীরা। স্থান সংকুলান না হওয়ায় শত শত লোক দাঁড়িয়ে থেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন তানভির, ফারহানা ও ফারিহা রহমান।

এদিন পিঠা প্রতিযোগিতায় ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন টরন্টোর বাঙালি গৃহিণীরা। নানা রঙের, নানা বর্ণের বাহারি পিঠা সাজিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তারা। গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিলে বাঙালি কমিউনিটিতে। শহরজুড়ে আলোচনা ছিল কে হবেন সেরা পিঠা শিল্পী? অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এসে উপস্থিত হলো। মঞ্চে উঠে বিচারকদের দেওয়া রায় পড়ে শোনালেন ‘দেশে বিদেশে’ সম্পাদক নজরুল মিন্টো। এসময় করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা অডিটোরিয়াম।

পিঠা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন সায়কা সাইয়ারা সুপ্তি। তিনি পেয়েছেন ৯৬ পয়েন্ট। ৯৫ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন শায়লা রহমান ও তৃতীয় হয়েছেন লিনা ডি কস্তা। তিনি পেয়েছেন ৮৭ পয়েন্ট। এছাড়া, সেরা দশের মধ্যে যারা স্থান পেয়েছেন তারা হলেন- রুবি, সেলিনা নজরুল, ববিতা সেন, মৌসুমি, হৃদয়, রুনা বেগম ও গীতা পাল। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিজয়িনীদের যথাক্রমে ৫০০ ডলার, ৩০০ ডলার ও ২০০ ডলার নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়। বাকি সাতজনকেও বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত দেওয়া হয়।

টরন্টো পিঠা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন সুপ্তি, ১ম রানার্স আপ শায়লা ও ২য় রানার্স আপ লিনা।

পিঠা শিল্পী নির্বাচনে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার জয়ন্ত সিনহা, রিয়েলটর ও সমাজ সেবক শংকর দে, রান্না বিশেষজ্ঞ হোসেন আহমেদ, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মৌসুমি বড়ুয়া ও রান্না বিশেষজ্ঞ রফিকুল আলম।

সুন্দর স্টলের জন্য প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন লিমা (টুনা টুনির পিঠা), দ্বিতীয় হয়েছেন ফারিয়া আহমেদ (বাংলা কৃষ্টি), এবং তৃতীয় হয়েছেন শাহীন রেজওয়ান (হৃদয় হরণ)। সুন্দর স্টল নির্বাচনে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন আহমেদ হোসেন, জাহানারা নাসিমা ও ডলি ভূঁইয়া।

র‍্যাফেল ড্রতে পুরস্কার হিসেবে ৫০ ইঞ্চি টেলিভিশন দেওয়া হয় কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাঈনুল খানের সৌজন্যে।

অনুষ্ঠান আয়োজনে আরও কাজ করেছেন কনভেনর রিফাত নওরিন, কো-কনভেনর ডলি ভূঁইয়া, কো-কনভেনর জাহানার নাসিমা, চিফ কো-অর্ডিনেটর গাজী স্বপন।

সহযোগিতায় ছিলেন বাবলু চৌধুরী, তাসমিয়া আফরোজ স্বর্ণা, পলি, তাহমিনা, তরুণা হাসান, মুনিমা রিনি, সামিয়া কবির, ফওয়াদ হাসান, রিদম, পারভিন, লাবনী, তাসমিয়া, জুলি, মাহি, আরজু ও আমাদ। সাউন্ড ও লাইটের দায়িত্বে ছিলেন রিংকু ও মামুন। ক্যামেরায় ছিলেন মোহাম্মদ আলী খান ও সৈয়দ মাহবুব। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম আজাদ, মহসিন ভূঁইয়া ও রফিকুল টিপু।

অনুষ্ঠান সফল করতে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে ফুল দিয়ে সম্মানিত করা হয়।

এছাড়া, এ উদ্যোগকে সফল করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন খ্যাতনামা ব্যারিস্টার ওমর জাহিদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইকবাল রুশদ, কমিউনিটি নেতা নুরুল ইসলাম আজাদ, মূলধারার রাজনীতিক মহসিন ভূঁইয়া, বিশিষ্ট ফার্মাসিস্ট কানন বড়ুয়া, রিয়েলটর মনির ইসলাম, রবিন ইসলাম, ফারাহ খান, মর্টগেজ এজেন্ট আনিসুর রহমান, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তমাল দে, অ্যাকাউন্ট্যান্ট মনোজ বসাক, ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন, ট্র্যাভেল ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান, রিংকু সোম।

যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পুরস্কার দিয়েছেন তারা হলেন আজাদ কিচেন, মারহাবা, সী ফ্যাশন, কানিজ বুটিক, রেডহট রেষ্টুরেন্ট, এটিএন, রিয়েলটর এবাদুর রহমান, কমিউনিটি নেতা হোসেন আহমেদ।

সবশেষে অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন, ফুলেল শুভেচ্ছা এবং উত্তরীয় পরিয়ে দেশে বিদেশের পক্ষ থেকে সম্মানিত করা হয়। উদ্যোক্তারা জানান, পরবর্তী পিঠা উৎসব ও পিঠা প্রতিযোগিতা আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে।

এ বছরের শুরুতে ‘দেশে বিদেশে’ রাঁধুনি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ব্যাপক সাড়া জাগায়। এ পর্যন্ত দু’টি রাঁধুনি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং উভয় প্রতিযোগিতায় টরন্টোর গৃহিণীদের মধ্যে ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। আগামী বছরের ৩১ মে তৃতীয় রাঁধুনি প্রতিযোগিতা এবং আগামী ১৮ অক্টোবর ২০২০ দ্বিতীয় পিঠা উৎসব ও প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।