হাইকমিশন মিলনায়তনে শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) এক আলোচনা সভা ও বহু ভাষা-ভিত্তিক একটি বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভার শুরুতেই ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
নাইজেরিয়া বাংলাদেশ দূতাবাস শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতায় হাইকমিশনার শামীম আহসান বলেন যে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি সারা বিশ্বে ভাষার বৈচিত্র্য উদযাপনের একটি প্রেক্ষাপট তৈরী করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি মহান ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃস্থানীয় ভূমিকা ও ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেন।
ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এই আন্দোলনের ধারাবাহিক অর্জনই বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
অনুষ্ঠানে আবুজায় ইউনেস্কোর আঞ্চলিক প্রতিনিধি ইয়ো ইদো বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরতে গিয়ে এক্ষেত্রে ইউনেস্কোর ভূমিকার কথা উল্লেখ করার সাথে সাথে ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলনে বাংলাদেশী তরুণদের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেন। এই মহান ভাষা আন্দোলন ও আত্মত্যাগের ভিত্তিতে ইউনেস্কো, ২১ ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ভারতের হাইকমিশনার আভেয় ঠাকুর তার বক্তৃতায় মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য এই অনন্য আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশাল অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান।
নাইজেরিয়ার ন্যাশনাল আর্টস এন্ড কালচার এর মহাপরিচালক ওতুনবা ওলেসেগুন রানসুয়ে আলোচনায় অংশ নেন। দিবসটির মূল চেতনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে শান্তি ও পারস্পরিক বোঝাপড়া সৃষ্টির ক্ষেত্রে ইউনেস্কোর ঘোষণার তাৎপর্য অনেক।
কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এর আগে হাইকমিশনে সম্প্রতি নির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কর্মসূচি শুরু করা হয়।
সকালে হাইকমিশনে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা অর্ধনমিত করা হয় এবং দিবসটি উপলক্ষে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
বাংলা একাডেমীর বইমেলায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রথমবারের মতো প্যাভিলিয়নের উপরে একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ভারতের সময়: ০৭২০ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
টিআর/এমএইচএম