ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

লিসবনে জাতীয় শোক দিবস পালিত

সমীর দেবনাথ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
লিসবনে জাতীয় শোক দিবস পালিত

পর্তুগাল থেকে: নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সোমবার (১৫ আগস্ট) স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে লিসবনের বাংলাদেশ দূতাবাস।  

জাতীয় শোক দিবসের মর্মের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দূতাবাস প্রাঙ্গণে ব্যানার ও পোস্টার লাগানো হয়।

অংশগ্রহণকারীরা সাদা-কালো পোশাক পরিধান করে অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং কালো ব্যাজ ধারণ করেন।  
 
সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করেন। এছাড়া দূতাবাসের প্রদর্শনী কক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী বর্ণাঢ্য জীবনের যুগান্তকারী ঘটনাবলীর ওপর ‘আলোকচিত্রে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন’ শীর্ষক এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। শিরোনাম সম্বলিত এবং কালানুক্রমিকভাবে সাজানো আলোকচিত্রসমূহ দর্শনার্থীরা আগ্রহের সঙ্গে পরিদর্শন করেন।

দিবসটি উপলক্ষে সন্ধ্যায় এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এতে দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারী, রাজনৈতিক দল, সংবাদমাধ্যম, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা এবং ছাত্রসহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন। এ পর্বের শুরুতে রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি বিভিন্ন সংগঠণের নেতাকর্মীরা দূতাবাসে স্থাপিত জাতির পিতার ম্যুরাল প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। এরপর জাতির পিতা ও তার পরিবারবর্গ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সব শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। এরপর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচকরা জাতির পিতার অতুলনীয় অবদান ও তার জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরেন এবং ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর বর্বর হত্যাকাণ্ড স্মরণ করে তীব্র নিন্দা-ক্ষোভ প্রকাশ করেন।  

রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান তার বক্তব্যের শুরুতেই ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর অভিশপ্ত রাতে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির নীল নকশায় শাহাদাতবরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যসহ সব শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।  

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রাণনাশের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু ব্যক্তি মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেনি বরং তারা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করতে। কিন্তু ঘাতকরা বাঙালির মন থেকে যেমন বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবিকে মুছে ফেলতে পারেনি, তেমনই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চিরন্তন শিখাকেও নিভিয়ে দিতে পারেনি।  রাষ্ট্রদূত উপস্থিত সবাইকে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রূপান্তর করার কাজে সংকল্পবদ্ধ হবার জন্য আহ্বান জানান। এছাড়া রাষ্ট্রদূত কোভিড পরবর্তী সময়ে এবং ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোরও আহ্বান জানান।  

আলোচনা পর্ব শেষে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্র/সরকারপ্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এবং বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বিষয়ের ওপর নির্মিত দু’টি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পর্ব নিবেদন করা হয়। এতে জাতির পিতার ওপর রচিত কবিতা আবৃত্তি করা হয়। সবশেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের অন্যান্য শহীদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।