ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

দেশের লাখো মসজিদের তারাবিতে আজ মদ ও জুয়ার বিরুদ্ধে ঘোষণা আসবে

মুফতি মাহফূযুল হক, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৬
দেশের লাখো মসজিদের তারাবিতে আজ মদ ও জুয়ার বিরুদ্ধে ঘোষণা আসবে

চলতি রমজান মাসের পঞ্চম তারাবি আজ অনুষ্ঠিত হবে। আজকের তারাবিতে পবিত্র কোরআনে কারিমের তেলাওয়াতকৃত অংশের উল্লেখযোগ্য বিষয়বস্তু হচ্ছে, মদ ও জুয়া প্রসঙ্গে।

যেহেতু বাংলাদেশের সিংহভাগ মসজিদে এক নিয়মে খতমে তারাবির চলে, সে হিসেবে বলা চলে, আজ একযোগে দেশের লাখো মসজিদে খতমে তারাবির জামাতে হাফেজরা মদ ও জুয়ার বিরুদ্ধে ধর্মের অবস্থান ঘোষণা করবেন। যুদ্ধ ঘোষণা করবেন সামাজিক অনাচারের মূলে থাকা এই দুই বিষয়ের বিরুদ্ধে।

আজকের পঠিত সূরা মায়েদার ৯০-৯১ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, ভাষ্কর্য, প্রতিকৃতি ও ভাগ্য নির্ণয়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর। তাহলে তোমরা সফল হতে পারবে। শয়তান তো মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিবাদ সৃষ্টি করতে চায়, জিকির ও নামাজ থেকে তোমাদের দূরে রাখতে চায়। তবে কি তোমরা বিরত হবে না?’

এ সম্পর্কে সূরায়ে বাকারার ২১৯ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘লোকে তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, উভয়ের মধ্যে মহাপাপ ও এবং মানুষের জন্য উপকারও আছে। কিন্তু এগুলোর পাপ উপকার অপেক্ষা অপেক্ষা অধিক। ’

মদ সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ অভিশাপ করেছেন মদের প্রতি, মাদকদ্রব্য সেবনকারীর প্রতি, পরিবেশনকারীর প্রতি, বিক্রেতার প্রতি, ক্রেতার প্রতি, প্রস্তুতকারীর প্রতি, বহনকারীর প্রতি, যার জন্য বহন করা হয় তার প্রতি। ’ –সুনানে আবু দাউদ: ৩৬৭৬

‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে মদ পান করেছে, এরপর তা থেকে তওবা করেনি; সে জান্নাতের শরবত থেকে বঞ্চিত হবে। ’ –সহিহ বোখারি: ৫৫৭৫

‘মাদকদ্রব্য সেবনকারীকে জাহান্নামীদের পুঁজ পান করানো হবে। ’ –সুনানে তিরমিজি: ১৮৬২

‘আল্লাহ মাদকদ্রব্য হারাম করেছেন’- এ কথা আমার মুখ থেকে বের হওয়া সত্ত্বেও কেউ যদি তা পান করে তবে সে বিয়ের প্রস্তাব করলে তার নিকট মেয়ের বিয়ে দেওয়া হবে না। সে কারও ব্যাপারে সুপারিশ করলে তার সুপারিশ মঞ্জুর করা হবে না। সে কোনো কথা বললে তা বিশ্বাস করা হবে না। কেউ যদি তার কাছে কোনো কিছু গচ্ছিত রেখে ক্ষতিগ্রস্থ হয়; তবে সে জন্য আল্লাহর কাছে কোনো সওয়াব পাবে না। কোনো ব্যাপারে তার থেকে শপথ নেওয়া হবে না। ’ -কানযুল উম্মাল: ১৩২৩১

‘কেউ মদ পান করলে আল্লাহ তার প্রতি চল্লিশ দিন পর্যন্ত অসন্তুষ্ট থাকেন। এমনকি এ অবস্থায় সে মারা গেলে সে কাফের হয়ে মারা গেল। ’ -কানযুল উম্মাল: ১৩২৩২

‘আমার উম্মতের কিছু মানুষ মাদকদ্রব্য সেবন করবে। তারা মদের নাম পরিবর্তন করে ভিন্ন রাম রাখবে। ’ –সুনানে আবু দাউদ: ৩৬৯০

‘আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী ব্যক্তি খাবারের এমন কোনো অনুষ্ঠানে ও আসরে উপস্থিত থাকবে না; যেখানে মদ পরিবেশন করা হবে। ’ –সুনানে তিরমিযি: ২৮০১

প্রাচীন ও আধুনিক যে কোনো দ্রব্য অল্প বা বেশি পরিমাণে সেবন কিংবা ব্যবহার করার দ্বারা মানুষ মাতাল হয়ে যায়, মানুষের বিবেক ও বিবেচনা শক্তি বিলুপ্ত হয়ে যায়- তা মাদকদ্রব্য বলে বিবেচিত হবে।

মাদকদ্রব্য প্রস্তুত, সরবরাহ, বিক্রয়, ক্রয়, সংরক্ষণ, পরিবেশনসহ সব কিছুই হারাম। সরাসরি মাদকদ্রব্য সেবন ও ব্যবহার করা যেমন হারাম, এর বিক্রয় লব্ধ অর্থ ভোগ করাও তেমনি হারাম। আল্লাহতায়ালা সবাইকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।