ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

এমন কষ্টের রোজা আগে দেখেনি সিরিয়ার শরণার্থীরা!

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৪ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
এমন কষ্টের রোজা আগে দেখেনি সিরিয়ার শরণার্থীরা! এমন কষ্টের রোজা আগে দেখেনি সিরিয়ার শরণার্থীরা!

সিরিয়ায় ছয় বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ শরণার্থী হয়েছেন। নিজেদের বাড়ি-ঘর হারিয়ে শরণার্থী শিবিরে একটি কামরার মধ্যে কোনো রকমে দিন কাটছে তাদের। থাকার জায়গার সঙ্কটের পাশাপাশি আর্থিক দৈন্যতা তাদের সঙ্গী।

ইদলিবিয়ের বাসিন্দারা শরণার্থী শিবির আসার পর এই প্রথম সবচেয়ে খারাপ রোজা পার করছেন। তাদের মতে এমন দিন তাদের জীবনে আগে কখনও আসেনি।

২০১৪ সালের পর সিরিয়ার সরকার ও সশস্ত্র বিদ্রোহী দলগুলোর মধ্যে কয়েক দফায় চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর থাকা এর মধ্যে রয়েছে বিদ্রোহীরা অস্ত্র পরিহার করলে সরকারি দল তাদের পরিবার নিয়ে দেশ ছাড়ার সুযোগ দেবে।

সরকারি বাহিনীর চাপের মুখে দামেস্ক, আলেপ্পো, হোমস ও ইদলিব থেকে লাখ লাখ সিরীয় নাগরিক শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। তবে সরকারের দাবি, বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে আশ্রয়ে যাওয়ার পথ করে দিতেই তারা এসব চুক্তি করেছে।

২০১৬ সালে সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের কাছ থেকে আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ওই সময় আলোপ্পোর পূর্বাঞ্চলীয় ইদলিব নগরী থেকে লাখ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, আলেপ্পো, ইদলিব থেকে প্রায় ৯ লাখ সিরীয় শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। এদেরই একজন দুই সন্তানের জননী জামেলা।  

তিনি বলেন, ‘পরিবার নিয়ে এক তাঁবুতে থাকি। তিন বছর আমরা বিমান হামলার মধ্যে থেকেছি। ২০১২ সালের পর থেকে গত বছর পর্যন্ত রমজান আমাদের কাছে একই রকম ছিল। গোলাগুলি, বিমান হামলা বিস্ফোরণ। কিন্তু তার ভেতরও জীবন ভালোই ছিল।

আমার চাহিদা মতো জিনিসপত্র কিনতে পারতাম। পুরুষরা বাইরে কাজ করতে যেতো। আমার স্বামী স্কুল শিক্ষক ছিলেন। তিনি যে টাকা আয় করতেন তা দিয়ে আমাদের চলে যেত। কিন্তু এখানে তো কিছুই করার নেই। এমন কষ্টকর রমজান আমাদের জীবনে কখনও আসেনি। ’

৪১ বছরের আলী হাজ খালেদ। তিন সন্তানের জনক খালেদের বাড়ি ছিল আলেপ্পোর পাশে আল মায়সার এলাকায়। এখন তারা থাকেন ইদলিবের নিকটবর্তী সালাকিন শহরে।

তিনি বলেন, ‘পরিবারের জন্য আমার মতো অনেকেই নিজ দেশে শরণার্থী হয়েছেন। এখনও অনেকে বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন। তার পরও স্বপ্ন দেখি, একদিন নিজ বাড়িতে ফিরবো। বাস্তুচ্যুত হওয়া ছাড়াও আমরা চরম দরিদ্রতা ও অনাহারের মাঝে দিন কাটাচ্ছি। আগেই আমাদের জীবন অনেক ভালো ছিল। এখন আমরা বসবাস করি তাঁবুতে। বলুন, এটাকে কি সুন্দর জীবন বলে? আপনারা কি মনে করেন, আমরা খুব ভালো অবস্থায় আছি?’

তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের এমন পরিস্থিতিতে নিয়ে দাড় করিয়েছিল যে এখানে না এসে কোনো উপায় ছিল না। অনাহারে, অর্ধাহারে রোজা কাটছে। অনেক কিছুই প্রয়োজন। কিন্তু কেনার মতো টাকা নেই। ’

-আল জাজিরা অবলম্বনে

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।