পটুয়াখালী: পবিত্র রমজানুল মোবারকে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ জনকে বিনামূল্যে ইফতার করান পটুয়াখালী মদিনা জামে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। তবে করোনার লকডাউনে দুই বছর বন্ধ ছিল এই কার্যক্রম।
পটুয়াখালী পৌরসভার লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী মদিনা জামে মসজিদে রমজানের দিনে এরকম ইফতার বিতরণ করতে দেখা যায়। স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের দানে নিয়মিত ইফতার বিতরণ করা হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
মসজিদের সঙ্গে আছে একটি হাফিজিয়া মাদরাসা। এখানে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী হেফজ ও নাজেরা বিভাগে পড়াশোনা করেন।
মসজিদে ইফতার বিতরণের জন্য গঠন করা হয় আলাদা টিম। এই টিমের নেতৃত্ব দেন পটুয়াখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মসজিদের খাদেম জাহিদ হোসেন সিকদার এবং মো. এমদাদুল হক গাজী।
এই টিমে স্থানীয় একদল তরুণ সময় দিয়ে থাকে। মো. কামাল খান, আল আমিন, আব্দুল্লাহ ও সিদ্দিকুর রহমান।
রমজানের প্রতিদিন আসরের পরে আসর বসে ইফতার তৈরির। একদল খাদেম বসে পড়েন ইফতার তৈরিতে। সারি সারিভাবে রাখা হয় ইফতারের থালা। একপাশে বানানো হয় চিড়ার শরবত। প্রতিটি প্লেটে খেজুর, ছোলা, জিলাপি, পেঁয়াজু ও ডিম দেওয়া হয়।
ইফতারের ১০/২০ মিনিট আগেই দলে দলে পথচারী, নিম্ন আয় এবং মধ্যবিত্তসহ নানান শ্রেণীপেশার মানুষ এসে সারি করে বসে পড়েন। ইফতারের ১০ মিনিট আগে শুরু হয় দোয়া দরুদ ও মোনাজাত। মাদরাসার একজন শিক্ষক এই দোয়া পরিচালনা করেন।
মসজিদ ইফতার টিমের সদস্য ও পটুয়াখালী পৌরসভার কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন সিকদার বলেন, এই মসজিদে আমার বাবা ইফতার বিতরণে কাজ করতেন। আমিও তার ধারাবাহিকতায় কাজ করছি। ইফতার তৈরি করে মানুষকে খাওয়ানোর মধ্যে তৃপ্তি পায়।
ইফতার টিমের সদস্য এমদাদুল হক গাজী বলেন, আমি নিজ থেকেই প্রতি রমজানে ইফতার বিতরণের দায়িত্বে থাকি। বাজার করে সবকিছু প্রস্তুত করে দিয়ে আমি বাসায় চলে যাই। আমার জানা মতে ৪৫/৫০ বছর ধরে এই কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহর রহমতে যতদিন বাঁচবেন ততদিন এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন। এই কাজে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।
সারাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এবার দাম বেড়েছে ইফতারির। তবে এরকম দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিদিন ইফতার বিতরণে সারাদিন কষ্ট করে রোজা রেখে তৃপ্তির ইফতার পেয়ে খুশি অনেকেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২২
আরএ