রমজান মাস হলো- নেক আমল ও কল্যাণমূলক কর্মের বসন্তকাল। রমজানের দিনে রোজা রাখাকে আল্লাহতায়ালা ফরজ করেছেন আর রাতের ‘কিয়াম’ (যাকে কিয়ামে রমজান বা তারাবি বলা হয়) সুন্নত করেছেন।
হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানি চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে পরকালীন প্রতিদানের আশায় রমজান মাসের রাতে কিয়াম করবে (তারাবি পড়বে) তার অতীত জীবনের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
রোজা ফরজ হওয়ার পর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে কয়েক দিন জামাতে তারাবির সালাত আদায় করলেও পরবর্তীতে (নিয়মিত জামাতে আদায়ের ফলে আল্লাহর পক্ষ হতে) ফরজ হয়ে যাওয়ার আশংকায় সবাইকে তা একাকী আদায় করতে বলেন।
নবীজীর ইন্তেকালের পর আর সেই আশংকা না থাকায় এবং একাকী আদায়ে মানুষের গাফলতির শংকায় পরবর্তীতে খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর যুগে তিনি পূনরায় জামাতে তারাবি আদায়ের ব্যবস্থা করেন এবং সেই থেকে সকল যুগের উলামাগণ তা জামাতে আদায় করে আসছেন। অবশ্য কেউ কোনো ব্যস্ততার কারণে একাকি তারাবি আদায় করতে চাইলে তা সিদ্ধ।
তারাবির সালাতে পুরো রমজানে ইমাম সাহেবের কোরআনে কারিম একবার তেলাওয়াত করে শোনানো সুন্নত। অবশ্য এক্ষেত্রে সবচে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- অত্যন্ত ধীরস্থীর অথবা স্বাভাবিকভাবে এই সালাত আদায় করা।
কেননা, আল্লাহর নিকট আমলের পরিমাণের চেয়ে গুণগত মান বেশি মূখ্য। নামাজের বিষয়ে একাধিক হাদিসে তাড়াহুড়ো না করার নির্দেশ এসেছে। নামাজে তাড়াহুড়ো করাকে নিকৃষ্ট চুরি বলে অভিহিত করা হয়েছে নবীজির হাদিসে। অথচ আমাদের সমাজের সাধারণ চিত্র হলো- রমজানে তারাবির নামাজে কেরাত পাঠ, রুকু ও সিজদা সবক্ষেত্রেই তাড়াহুড়ো করা। এতে আমলটির মান অনেক কমে যায়। অনেক সময় আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্যতাও হারায়।
অনেকে কোনো কারণে তারাবির নামাজ আদায় করতে না পারলে সেদিন আর রোজা রাখেন না। তাদের ধারণা, তারাবি না পড়তে পারলে আর রোজা রেখে লাভ নেই। অথচ ধারণাটি ভুল। কোনো কারণে তারাবি না পড়তে পারলেও রোজা রাখতে হবে এবং তাতে রোজার শুদ্ধতায় কোনো প্রভাব পড়বে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
এসআই