রাজশাহী: প্রাচীন স্থাপত্যের প্রতীক হয়ে আছে রাজশাহীর পবার তিন গম্বুজ শাহী মসজিদ। এর অসাধারণ নির্মাণশৈলী আজও নজর কাড়ছে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের।
রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার প্রত্যন্ত গ্রাম বাগধানীতে রয়েছে এই মসজিদটি। যেখানে জড়িয়ে আছে সময়ের নানান উপাখ্যান। রাজশাহীতে কালের সাক্ষী হয়ে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকা হাতে গোনা কয়েকটি মসজিদের মধ্যে এটি একটি৷ আগের সেই চাকিচিক্য ও জৌলুশ না থাকলেও এটি প্রাচীনকালের নান্দনিক নিদর্শন।
আজ প্রায় আড়াইশ বছর আগের ঐতিহ্যের স্মারক বহন করছে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদটি। এর প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী যেকোনো পর্যটককে খুব সহজেই মুগ্ধ করে। জনশ্রুতি আছে- এক সময় মনবসনা পূরণ করতে সবাই এই মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতেন। এ জন্য দেশের দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ যেতেন সেখানে। এখনও একটু প্রশান্তির পরশ পেতে শহরের কোলাহল ঠেলে মানুষ ছুটে যান সেখানে।
মসজিদটির ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে সদর দুয়ার। সেখানে ফারসি হরফে লেখা একটি শিলালিপি রয়েছে। যেখানে কালো অক্ষরে লেখা আছে মুন্সি মোহাম্মদ এনায়েতুল্লাহ বাংলা ১২০০ সালে নির্মাণ করেছেন এই শাহী মসজিদটি। তিন হাজার ২০০ বর্গফুট আয়তনের শাহী মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট, প্রস্থ ৪০ ফুট। মসজিদটির তিনটি মেহেরাব, তিনটি দরজা, দুটি জানালা ও একটি মিনার রয়েছে।
মসজিদটির চার দিকে রয়েছে মনমুগ্ধকর নকশা করা গম্বুজ আকৃতির নান্দনিক পিলার। মাথার ওপরে রয়েছে তিনটি সুদৃশ্য গম্বুজ। এছাড়া শাহী মসজিদের চারপাশের দেয়ালের ভেতর ও বাইরে চিনামাটিতে মনোরম নকশা রয়েছে।
পবার বাগধানী গ্রামের আশরাফ আলী বাংলানিউজকে বলেন, এক সময় মনবাসনা পূরণের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে মুসল্লিরা আসতেন। নামাজ আদায়ের পর দোয়া কবুল হয়। সেই আশায় এখনও প্রতি শুক্রবার জুম্মার দিন সেখানে মুসল্লিদের ভিড় হয়।
১৯৯০ সালের ভূমিকম্পে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয়দের মতে, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর মসজিদটির প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নিলে এটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে রূপ নিতে পারে।
যেভাবে যাবেন
রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে নওহাটা পৌরসভার বাগধানী শাহী মসজিদটি অবস্থিত। মহানগরীর গৌরহাঙ্গা রেলগেট থেকে তানোর রোডে সিএনজি চালিত অটোরিকশা করে যাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
এসএস/এসআইএস