খুলনা: খুলনায় বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল করায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) খুলনার নেতারা।
এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
রোববার (২০ এপ্রিল) বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এনসিপি খুলনার নেতা আহম্মদ হামীম রাহাত ও ডা. আব্দুল্লাহ চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, সম্প্রতি খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি দেশের ইতিহাসে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে মিছিল করেছে। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগের হাতে প্রায় দুই হাজার নাগরিককে হত্যার রক্ত লেগে আছে ও হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। ৫আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে খুনি হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করার আট মাসের মধ্যে এ সন্ত্রাসী সংগঠনের দেশব্যাপী সিরিজ কর্মসূচি জুলাই-পরবর্তী বাংলাদেশের অস্তিত্বে বারবার আঘাত হানার অপচেষ্টা। ছাত্র-জনতা এ অপচেষ্টাকে এবার কঠোরভাবে প্রতিহত করবে।
তারা বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতা রাজপথে অবস্থানকালে এ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রাস্তায় নামতে সাহস পায়নি। কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হলো, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে ছাত্র-জনতা নিজ কাজে ফিরে যাওয়ার পর দেশবাসী প্রায়শই এমন অরাজকতার শিকার হয়েছে। আট মাস পূর্বে যে জিরো পয়েন্টে ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ মীর মুগ্ধের তোরণের সন্নিকটে পরাজিত শক্তির এমন আস্ফালন আমাদের পীড়া দেয়। প্রশাসনের এ নির্লিপ্ততা ও নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ ও নিন্দনীয়। এটি শুধু স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা নয়, বরং গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নিয়োজিত প্রশাসনের দুর্বলতার প্রতিফলন। আমরা আরও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আওয়ামী লীগের ক্ষমতার কেন্দ্র শেখ বাড়িকে গুড়িয়ে দিতে খুলনাবাসী বিন্দুমাত্র কালক্ষেপণ করেনি, আমরা যদি বাংলাদেশের বুকে আবারও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী তৎপরতা লক্ষ্য করি তাহলে দেশের মাটিতে ছাত্র-জনতা আবার জুলাই ফিরিয়ে আনবে, যার সূচনা হবে খুলনা থেকে।
লিখিত বক্তব্যে তারা আরও বলেন, দেশের সব গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমিক শক্তির প্রতি আহ্বান জানাই মতপার্থক্য ভুলে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এ অপশক্তির বিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত অবস্থান গড়ে তুলতে হবে। একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক ঐক্যের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে এ অপশক্তিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে তারা বারবার সুযোগ নিচ্ছে, ইতিহাস বিকৃত করছে, এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এ ধরনের অবস্থান যে জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেতনার জন্য মারাত্মক হুমকি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গণতন্ত্র, জুলাই অভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধকে যারা ধারণ করেন, তাদের এখনই ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
ইন্টারিম কে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই আপনারা যদি অতি দ্রুত এ সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে উদ্যোগ না নেন তবে তীব্র আন্দোলনের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেন বলেও লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৫
এমআরএম/আরআইএস