ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩২, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৬

সারাদেশ

নদী দখল করে অট্টালিকা বানাতে দেওয়া হবে না: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
নদী দখল করে অট্টালিকা বানাতে দেওয়া হবে না: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

কক্সবাজার: নদীর তীর দখল করে কাউকে অট্টালিকা বানাতে দেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নৌ-পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি বাঁকখালী নদী এ জেলার প্রাণ।

নদীর পুরোনো চিত্র দেখেছি। বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হলো দখল-দূষণে প্রায় মুমূর্ষ অবস্থা। আমরা নদীবন্দর করবো, আর দখলকারীরা নদীর তীর দখল করে অট্টালিকা বানাবে, এটাতো হতে দেওয়া যায় না।  

নৌ-মন্ত্রণালয় উচ্ছেদের বিষয়টি দেখবে আর পরিবেশ মন্ত্রণালয় দেখবে পরিবেশ বিষয়ক ক্ষতিপূরণ। শিগগির এ উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে বাঁকখালীর প্রাণ রক্ষা করা হবে, বলেন ড. সাখাওয়াত হোসেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজারের বদরমোকাম এলাকায় বাঁকখালী নদীর দখল হয়ে যাওয়া কস্তুরাঘাট এলাকা পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

এর আগে সকাল ১১টার দিকে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন শহরের বদরমোকাম মসজিদ সংলগ্ন বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট পরিদর্শনে আসেন। তারা নবনির্মিত কক্সবাজার-খুরুশকুল ব্রিজ ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখেন।  

পরিবেশবিদদের মতে, প্রায় প্রতিদিনই প্রভাবশালীদের থাবায় বাঁকখালীর চরের কোথাও না কোথাও পাকা ভবন উঠছে। প্রশাসনের সীমাবদ্ধতার অজুহাত এবং আইনি জটিলতায় বেপরোয়া দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। অনেকটা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ নদী। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলে নদীর তলদেশ ভরাট করা হচ্ছে। নদীর জায়গা দখল ও প্যারাবন ধ্বংস করে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা। মাঝে মাঝে জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও আবার তৈরি করা হয়। এক সময়ের নৌপথে শহরের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র কস্তুরাঘাট এখন বিশাল আবাসিক এলাকায় পরিণত হয়েছে।

দীর্ঘদিনের এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটসহ বিভিন্ন অংশ পরিদর্শনে আসেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং সাখাওয়াত হোসেন।

বাঁকখালী ও অন্য নদীর তীর দখল বিষয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় দুই উপদেষ্টা জেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, জেলা পুলিশ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক শুরু করেছেন।

বৈঠকে কক্সবাজার নদী বন্দরের অবৈধ দখল-দূষণ রোধ, নদীবন্দরের সীমানা পিলার স্থাপন, ড্রেজিংসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে নৌপরিবহন উপদেষ্টার একান্ত সচিব জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত উপদেষ্টার সফরসূচিতে উল্লেখ রয়েছে।

অপরদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ও বিআইডব্লিউটিএর ২০২৩-২০২৪ সালের আলাদা প্রতিবেদনে বাঁকখালী নদী দখলে জড়িত ১৩১ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। আজকের বৈঠকে তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত আসে তা নিয়ে কৌতূহল কক্সবাজারের সচেতন মহলে। এর মধ্যে কস্তুরাঘাট সংলগ্ন নির্মিত খুরুশকুল সেতুর আশপাশ ঘিরে দখলে জড়িত আরও ৫০ জনের মাঝে ২৩ জনের নামে পরিবেশ অধিদপ্তর মামলাও করেছে।

এদিকে বাঁকখালী নদী পরিদর্শন শেষে কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে সি-ট্রাকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন। ৬ নম্বর জেটি ঘাট দিয়ে উদ্বোধন করা সি-ট্রাকে মহেশখালী গেছেন উপদেষ্টা। সেখানে সুধী সমাবেশে তিনি বক্তব্য রাখেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সারাদেশ এর সর্বশেষ