দিনাজপুর: স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও দলান্ধ থাকলে আর মার্কা দেখে ভোট দিলে বাংলাদেশের পরিবর্তন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠন সারজিস আলম।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বকুলতলা মোড়ে এক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, রাজনৈতিক দল দেখার দরকার নেই, মার্কা দেখার দরকার নেই, যেই মানুষটা ভালো, যেই মানুষটা টাকা ছাড়া আপনার কথা বলে, আপনার জন্য কাজ করে, তাদেরই আগামীর বাংলাদেশের জন্য প্রতিনিধি নির্বাচন করতে হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও যদি আপনারা দলান্ধ থাকেন, মার্কা দেখে ভোট দেন, তাহলে বাংলাদেশের পরিবর্তন সম্ভব নয়। যে লোকটা ভালো কাজ করে, আপনাদের কথা বলে, আপনাদের কথা শোনে, নির্বাচন ছাড়াও আপনাদের কাছে আসে, সে যদি বড় কোনো দলের নাও হয়, তাও তাদেরই আগামীর বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে উত্তরাঞ্চলকে একটা দলের অংশ মনে করে সব সময় বঞ্চিত করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের একটা পৌরসভায় যে উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়া হতো উত্তরাঞ্চলের পুরো একটা জেলাতেও সেই বরাদ্দ দেওয়া হতো না। দক্ষিণাঞ্চলে একটা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হতো, পুরো রংপুর বিভাগে সেই বরাদ্দ দেওয়া হতো না। বিগত এক যুগ উত্তরাঞ্চল উন্নয়ন বৈষম্যের মধ্য দিয়ে গেছে। উত্তরাঞ্চলের কোথায় কি সমস্যা, সেগুলো রাজপথ থেকে মাঠে ঘাটে দেখে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টার কাছে বলার জন্য আমরা এখানে এসেছি। আমরা আগের রাজনৈতিক চর্চায় যেটা দেখেছি যে ভোটের দু-একদিন আগে নেতারা আপনাদের কাছে আসে, পরের পাঁচ বছরে আর তাদের দেখা পাওয়া যায় না। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, আগামী দিনে যারা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে চায়, তাদের আগে প্রত্যেকটি জেলায়, উপজেলায়, ইউনিয়নে ঘুরতে হবে। আগে দেখতে হবে মানুষ কি চায়। রাস্তাঘাটগুলোর কি অবস্থা, হাসপাতাল আছে নাকি হাসপাতালে ডাক্তারও আছে। থানায় ভালো কর্মকর্তা আছে নাকি কথা বলার আগে টাকা চাওয়া কর্মকর্তারা আছে। আমরা দেখতে এসেছি, ভূমি অফিসগুলোতে মানুষ সেবা পায় কিনা, নাকি সেবা পাওয়ার আগে টাকা নিয়ে দর কষাকষি হয়।
আমরা মাঠে-ঘাটে দেখতে এসেছি সাধারণ জনগণ কোনো সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি কি না। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় চাঁদাবাজি হয় কি না। বিরলের মতো উপজেলাতেও অটোরিকশা, ট্রাককে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি হয় কি না। আমরা স্পষ্ট করে একটা কথা বলে রাখি, আগামীর বাংলাদেশে চাঁদাবাজের কোনো স্থান হবে না। একজন চাঁদাবাজ সে যেই দলেরই হোক না কেন, যত ক্ষমতাবান হোক না কেন, আমরা তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাব। একটা জেলা-উপজেলার চাঁদাবাজরা শেখ হাসিনার চেয়ে ক্ষমতাধর নয়। যদি শেখ হাসিনার পতন হতে পারে, তাহলে এসব চাঁদাবাজেরও পতন সম্ভব।
এসময় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, ড. আতিক মুজাহিদ উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, আবু সাঈদ লিওন, মিথুন আলী নাছের খান, তানভীর রেজা তন্ময়সহ দিনাজপুর জেলা ও বিরল উপজেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসআই