বরিশাল: বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত দুই দিন ধরে অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। পাশাপাশি নগরীর নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
টানা বৃষ্টির ফলে বরিশাল বিভাগের সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। অনেক নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যার কারণে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
নগরের বগুড়া রোড, মুন্সির গ্যারেজ, শীতলাখোলা মোড়, জিয়া সড়কসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পানি জমে থাকায় যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে পথচারীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। এ ছাড়া শহরের নিচু এলাকার বাসিন্দারা দুই দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে বসবাস করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে বরিশালের মেঘনা তীরবর্তী হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, মুলাদী, বাকেরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, গলাচিপা, দশমিনা, বাউফল, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, স্বরূপকাঠি, নাজিরপুর, ভান্ডারিয়া, বরগুনার জেলা সদর, পাথরঘাটা, বেতাগী, আমতলী, তালতলী, ভোলার চরফ্যাশন, তজুমদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
বগুড়া রোডের বাসিন্দা মিসবাহ হোসেন বলেন, অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়। এখন তো ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে টানা বৃষ্টি হয়েছে, তাই জলাবদ্ধতার কারণে বাসা থেকে বের হওয়া যায় না।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মারুফ বলেন, আমার দোকানে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়ে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
ভোলার যাত্রী মোতালেব মিয়া বলেন, ডাক্তার দেখাতে বরিশাল এসেছিলাম, কিন্তু দুই দিন ধরে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বাড়ি ফিরতে পারছি না।
আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৬ কিলোমিটার। এর ফলে নদ-নদীর পানি দ্রুত বেড়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বরিশাল অঞ্চলের কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, গজারিয়া ও কালাবদরসহ একাধিক নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক এবং বরিশাল নদীবন্দরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম রেজা জানান, নদীবন্দরে ২ নম্বর সংকেত থাকার কারণে শুক্রবার সকাল থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব যাত্রীবাহী ও মালবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।
এমএস/আরএইচ