কুষ্টিয়া: সমকামিতার অভিযোগে হাফিজুল ইসলাম নামে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে সমকামিতা, যৌন হয়রানি ও শিক্ষার্থীদের হেনস্তার অভিযোগও রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ^বিদ্যালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে গত ২২ ডিসেম্বর বিশ^বিদ্যালয়ের ২৬৬তম সিন্ডিকেট সভায় তার ইনক্রিমেন্ট বাতিল করে বাধ্যতামূলক এক বছরের ছুটি দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
অফিস আদেশে বলা হয়, হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৬তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলাবিধির ধারা ৪ (আই) (বি) ও ধারা ৫ ধারা অনুযায়ী সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বাৎসরিক একটি ইনক্রিমেন্ট বাতিল করা হয়।
একইসাথে তাকে সিন্ডিকেট সভার তারিখ থেকে এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হয়।
সেই সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৭তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি পুনরায় ব্যাপক তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির সুপারিশে গত ৩১ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৮তম (সাধারণ) সভার সাত নম্বর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী তদন্তের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও শৃঙ্খলার স্বার্থে তার এসব কর্মকান্ড ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির পরিপন্থী হিসেবে মূল্যায়িত হয়।
ফলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলাবিধির ৪(১) (এফ) ধারা মোতাবেক তাকে ৩১ মে থেকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
এর আগে হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে সমকামিতায় বাধ্য করা, শিক্ষার্থীদের হেনন্তা ও যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠলে গত বছরের ৮ অক্টোবর তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা মিললে গত বছরের ২৩ অক্টোবর তাকে বিভাগীয় সব রকম কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর বিভিন্ন অভিযোগ তুলে শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে উপাচার্যের কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৭টি অভিযোগ তুলে ধরেন এবং মৌখিকভাবে আরো বিভিন্ন অভিযোগ ও ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তাকে অপসারণের দাবি জানান।
এছাড়া, ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে কয়েক দফায় আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।
এসএইচ