জামালপুর: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবু পুনরায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ ফিরে পাওয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী এবং নিহত নাদিমের পরিবার।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে জামালপুরের সাধুরপাড়া ইউপির সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাবু যদি আবার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন, তবে এলাকাবাসীর ওপর পুনরায় নির্যাতন নেমে আসবে। তার অন্যায়-অবিচার আবারও শুরু হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে পুনরায় বরখাস্ত না করা হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।
নাদিমের মেয়ে রাব্বিলাতুল জান্নাত বলেন, আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যার পর বাবুর চেয়ারম্যান পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টে রিট করে সে আবারও পদ ফিরে পেয়েছে। এটি কি ন্যায়বিচার? হত্যাকারী কীভাবে আবার সেই পদে বহাল থাকতে পারে? আমি বিচার ব্যবস্থার কাছে দাবি জানাচ্ছি—তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।
এ সময় মানববন্ধনে উপস্থিত হন মাহমুদুল আলম বাবুর দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সময় ১০ বছর আয়নাঘরের মতো বন্দি জীবন কাটিয়েছি বাবুর কারণে। কন্যাসন্তানের মা হওয়ার পর মর্যাদা চাইলে সে আমার জীবন নষ্ট করে দেয়। এরপর এসব নিয়ে সাংবাদিকরা প্রতিবেদন করলে নাদিমকেও হত্যা করে বাবু। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, নাশকতা ও হত্যাসহ একাধিক মামলা চলমান। তারপরও কীভাবে তিনি আবার চেয়ারম্যান পদ ফিরে পেলেন? আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি তাকে গ্রেপ্তার না করা হয়, তবে এলাকাবাসী মিলে তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেব।
২০২৩ সালের ১৪ জুন পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হন সাংবাদিক নাদিম। পরদিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
পরে ২০২৩ সালের ২০ জুন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বাবুকে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে। কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি উচ্চ আদালতে রিট করেন। চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ছয় মাসের জন্য বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন। সেই আদেশের মেয়াদ অনুযায়ী, বাবু আর মাত্র ২০ দিন ইউপি চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকতে পারবেন।
এসআরএস