ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৫ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

নীলফামারীতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:২৬, জুলাই ৩০, ২০২৫
নীলফামারীতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে তিস্তা ব্যারাজ। সংগৃহীত ফাইল ছবি

নীলফামারী: উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছালেও তা এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।  

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় ছিল।

তবে সকাল ৯টায় তা কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার বিপৎসীমা নির্ধারিত রয়েছে ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইস গেট খুলে দিয়েছে। পানি পরিস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডালিয়া ডিভিশনের গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) নূরুল ইসলাম।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়বাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানি ও গয়াবাড়ী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে প্রায় আট হাজার পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

তিস্তার ভাটি অঞ্চল, বিশেষ করে ব্যারাজের পূর্বদিকে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার নদী বেষ্টিত চর ও চরের গ্রামগুলো ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বানভাসি মানুষগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছেন এবং বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন।

টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন বলেন, চর গ্রামের মানুষজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কখন যে ঘরবাড়ি সরাতে হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। নিম্নাঞ্চলগুলো ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে, যেকোনো সময় বন্যার পানি বাড়ি-ঘরে প্রবেশ করতে পারে। উজানের পানির প্রবাহ আরও বাড়লে আজ সন্ধ্যার মধ্যে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুবাস চন্দ্র জানান, ঝাড়সিংশ্বরসহ বিভিন্ন চর এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখা) তহিদুল ইসলাম বলেন, উজানের ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও স্থানীয় বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বাড়ছে। এরই মধ্যে নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, সকাল ৯টার সময় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যদি উজানের ঢল বন্ধ হয়, তবে সন্ধ্যার মধ্যে পানি আরও কমতে পারে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠে কাজ করছেন।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টির কারণে বুধবার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছিল। ৯টায় তা কিছুটা কমে বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বন্যা কবলিত এলাকায় নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।