নীলফামারী: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘এদেশে আওয়ামী ফ্যাসিজমের কারণে জনগণ বিগত দিনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে সব গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দলীয় লোক বসিয়ে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে নীলফামারীর জলঢাকার বগুলাগাড়ীতে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারানো শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘২৪ এর জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। তবে যারা গুম, হত্যা ও নির্যাতনে জড়িত ছিল, তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন। যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো ফ্যাসিস্ট শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ’
ডা. জাহিদ অভিযোগ করেন, ‘বিগত দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিয়েছিল, অথচ এখন এক বছর হতে যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন দেয়নি। বরং ফ্যাসিস্ট শাসনকে পুনর্জীবিত করার চেষ্টা চলছে। আমরা চাই দ্রুত নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে জবাবদিহিতামূলক সরকার গঠন হোক। ’
এসময় মাহেরীনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাম, নীলফামারী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মীর সেলিম ফারুক সেলিম, সদস্য সচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেলসহ ও স্থানীয় নেতকর্মীরা।
গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে প্রশিক্ষণরত যুদ্ধবিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জুনিয়র সেকশনের ক্লাসরুমে বিধ্বস্ত হয়। এতে মুহূর্তেই বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায় ভবনে। এসময় পাশের একটি ভবন থেকে বেশ কয়েকটি শিশু শিক্ষার্থীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন মাহরীন। শিশুদের নিরাপদে নেওয়ার একপর্যায়ে নিজেই আগুনে আটকে পড়েন মাহরীন। শরীরের অধিকাংশ দগ্ধ হয় তার। তাকে গুরুতর অবস্থায় নেওয়া হয় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের লাইফ সাপোর্টে। সেখানে রাত পৌনে ১০টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মাহেরীনের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ি গ্রামে। তার বাবা মহিতুর রহমান চৌধুরী ও মা সাবেরা চৌধুরী। মাহেরীন ছিলেন স্থানীয় বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্বাহী কমিটির সভাপতি। পারিবারিক পরিচয়েও ছিলেন একজন পরিচিত মুখ। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাতিজি। তার বাবা মহিতুর রহমান হচ্ছেন জিয়াউর রহমানের খালাতো ভাই। দাদি রওশানারা চৌধুরী ছিলেন জিয়াউর রহমানের খালা। জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ি চৌধুরীপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে মাহরীন চৌধুরীকে দাফন করা হয়।
এসআই