যশোর: স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে জহিরুল ইসলাম বিশ্বাস বাবু (৩৬) নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন যশোরের একটি আদালত।
সোমবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জাকির হোসেন টিপু এই রায় প্রদান করেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি জহিরুল ইসলাম বিশ্বাস বাবু আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি মাহাবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক বিষয় নিয়ে বাবু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বিথির (২২) বিরোধ চলছিল। বিথির বাবার বাড়ি অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা গ্রামে। সেখান থেকে ২০২২ সালের ১৫ জুলাই স্ত্রী ও দুই সন্তান সুমাইয়া (০৯) এবং সাফিয়াকে (০২) নিজ বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য রওনা দিয়েছিলেন বাবু।
তারা ভয়নগর উপজেলার চাঁপাতলা গ্রামে পৌঁছালে বাবু তার স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে লাশ ফেলে দেন চেঙ্গুটিয়ায় যশোর-খুলনা সড়কের পাশের একটি বাগানে। এই হত্যাকান্ড সংঘটিত করে বাবু চলে যান বসুন্দিয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে। সেখানে যেয়ে তিনি ঘটনার সবিস্তার বর্ণনা করেন। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
সাবিনা ইয়াসমিন বিথির বাবা মুজিবর রহমান এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বাদী জানান, ঘটনার ১১ বছর আগে সাবিনা ইয়াসমিন বিথির সাথে বাবুর বিয়ে হয়। কিন্তু, বিয়ের পর থেকেই তাদের সংসার সুখের ছিল না। নানা কারণে বিথি-বাবুর মধ্যে কলহ হতো। এক পর্যায়ে তা দ্বন্দ্বে গড়ায়।
বাদীর অভিযোগ, বাবু কারণে-অকারণে বিথিকে প্রায়ই মারধর করতেন। তার কাছে যৌতুকও দাবি করেন বাবু। মেয়ের সুখের কথা বিবেচনা করে বাদী বাবুকে টাকা দিয়েছিলেন। তারপরও বিথির ওপর নির্যাতন থামায়নি বাবু। যেদিন বাবু তার স্ত্রী-সন্তানদের খুন করেন সেদিনও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল।
মামলার তদন্তে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পায়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভয়নগর থানার এসআই গোলাম হোসেন ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর বাবুকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
সোমবার মামলার রায় ঘোষণার পর আদালত দণ্ডিত জহিরুল ইসলাম বিশ্বাস বাবুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এসএইচ