সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার একটি রেস্টুরেন্টে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২০ অক্টোবর) গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এরা হলেন- উপজেলার জামতৈল গ্রামের মো. আলমের ছেলে মো. আকাশ (২১), একই গ্রামের নান্নু সরকারের ছেলে মো. আতিক (২৩) ও কর্ণসূতি গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের ছেলে মো. নাজমুল হক নয়ন (২৩)।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় নির্যাতিত কিশোরীর মা বাদী হয়ে ধর্ষক নাইম হোসেনকে (২১) প্রধান আসামি করে আরও ছয়জনের নামে মামলা দায়ের করেন। নাইম চর কামারখন্দ গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। গ্রেপ্তারকৃত তিনজন মামলার এজাহার নামীয় আসামি।
ভুক্তভোগী কিশোরী উপজেলার কর্ণসূতি গ্রামের বাসিন্দা এবং সে স্থানীয় একটি দাখিল মাদরাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কামারখন্দ থানার উপ-পরিদর্শক রতন কুমার সাহা তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে মাদরাসা থেকে কলম কেনার জন্য বাইরে বের হলে ওই কিশোরীকে ছয়/সাতজন যুবক জোরপূর্বক অটোরিকশায় তুলে নেয়। তাকে জামতৈল সেন্ট্রাল পার্কের পাশে ডেরা ফাস্টফুড অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে নিয়ে ধর্ষণ করে নাইম। কিশোরীর চিৎকার যেন বাইরে না যায় সেজন্য বাকি আসামিরা সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজায়। একপর্যায়ে কিশোরীটি অসুস্থ হলে ধর্ষক ও তার বন্ধুরা হাসপাতালে নিয়ে সেখানে রেখে পালিয়ে যায়।
বর্তমানে ভিকটিম শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ টি এম নুরুজ্জামান।
ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, সকালে মেয়ে মাদরাসায় যায়। ছুটি হলেও সে বাড়ি না ফেরায় আমরা খুঁজতে থাকি। হঠাৎ কেউ ফোনে জানায় আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে সিরাজগঞ্জের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি আছে। সেখানে গিয়ে মেয়ের অবস্থা খুব খারাপ দেখে মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি।
এদিকে সোমবার সকালে ঘটনাস্থল ডেরা ফাস্ট ফুড অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকরা গিয়ে কয়েকজন যুবককে আড্ডা দিতে দেখে। এ সময় তারা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রেস্টুরেন্টটি সাময়িক বন্ধ করে দেয় এবং দুজনকে আটক করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ কামারখন্দ সেন্ট্রাল পার্ক সংলগ্ন এলাকার ওই রেস্টুরেন্টে তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীরা অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালায়। ওই এলাকায় মাঝে মধ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ বলেন, আলোচিত এই ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান শুরু করে। তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রধান আসামিসহ বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ক্রাইম সিন হিসেবে রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আরএ