ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

৩০ মাসে সর্বনিম্ন বিদেশি বিনিয়োগ

সাঈদ শিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৪
৩০ মাসে সর্বনিম্ন বিদেশি বিনিয়োগ

ঢাকা: শেয়ারবাজারে আশঙ্কাজনকহারে কমে গেছে বিদেশি নিট বিনিয়োগ। চলতি বছরের সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে বিদেশি নিট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে মাত্র ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

যা ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসের পর সবচেয়ে কম।
 
ঢাকা স্টাক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, আগস্ট মাসে বিদেশিরা শেয়ারবাজারে ৩১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেন। এর মধ্যে বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল ১৫২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে তারা শেয়ার ক্রয় করেন ১৬৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগস্ট মাসে বিদেশি নিট বিনিয়োগ হয় ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
 
২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে শেয়ারবাজারে বিদেশি নিট বিনিয়োগ হয় পাঁচ কোটি দুই লাখ টাকা। এরপর আর কখনো বিদেশি নিট বিনিয়োগ ১৫ কোটি টাকার নিচে নামেনি। আর সর্বশেষ ১৯ মাসের (আগস্ট বাদে) মধ্যে সবচেয়ে কম বিদেশি নিট বিনিয়োগ হয়েছে ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
 
এদিকে বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত ডিএসই’র তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৩ সালে শেয়ারবাজারে বিদেশি নিট বিনিয়োগ ছিল এক হাজার ৯৪৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বছরটিতে গড়ে প্রতিমাসে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১৬১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
 
চলতি বছরের শুরুর দিকেও বিদেশি বিনিয়োগের ওই ধারা অব্যাহত ছিল। বছরের প্রথম মাসেই (জানুয়ারি) বিদেশি নিট বিনিয়োগ হয় ২৭৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। মাসটিতে বিদেশিরা শেয়ারবাজারে ৫২৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেন।
 
এর পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে বিদেশি নিট বিনিয়োগ হয় ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। মাসটিতে মোট বিদেশি লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৫১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। পরের মাস মার্চে আবার বাড়ে বিদেশি বিনিয়োগ। মার্চে বিদেশি নিট বিনিয়োগ হয় ৯৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এ সময় বিদেশিদের মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩১৩ কোটি টাকা।
 
এপ্রিলে এক লাফে বিদেশি নিট বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭২ কোটি আট লাখ টাকা। এ সময় বিদেশিরা মোট লেনদেন করেন এক হাজার ১৮০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
 
মে মাসে আবার আগের মাসের তুলনায় বিদেশি নিট বিনিয়োগ কমে যায়। তবে তা শতকোটি টাকার উপরে ছিল। মাসটিতে বিদেশি নিট বিনিয়োগ হয় ১২৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এ সময় বিদেশিদের মোট লেনদেন ছিল ৫৭৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
 
জুনে বিদেশি নিট বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। মাসটিতে বেদেশিরা মোট লেনদেন করেন ৬০২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
 
এরপর আবার কমে যায় বিদেশি বিনিয়োগ। জুলাই মাস শেষে বিদেশি নিট বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। মাসটিতে বিদেশিরা মোট লেনদেন করেন ২৫৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা। বিদেশি বিনিয়োগ কমার এই ধারা সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসেও অব্যহত ছিল।
 
বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ দিয়ে কখনো সার্বিক বাজার পর্যালোচনা করা যায় না। তবে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সুযোগ বুঝে তথ্য পর্যালোচনা করে বিনিয়োগ করে থাকেন। সুযোগ মতো শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে তারা বাজার থেকে লাভ নিয়ে বেরিয়ে যান।
 
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স’র শিক্ষক বখতিয়ার হাসান বলেন, মে মাসের পর থেকে বাজার নিম্নমুখী ছিল। এ পরিস্থিতিতে জুন মাসে বিদেশি নিট বিনিয়োগ তিনশ’ কোটি টাকার উপরে দাঁড়ায়। কিন্তু জুলাই মাস ধরে ডিএসই’র মোট লেনদেন একশ’ থেকে দুইশ’ কোটি টাকার ঘরে ওঠানামা করে। এ কারণেই হয়ত বিদেশিরা বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়ে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন।
 
তিনি বলেন, সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়েছে। গড়ে প্রতিদিন ৫শ’ কোটি টাকার উপরে লেনদেন হয়েছে। এটি বাজারের জন্য একটি ভালো লক্ষণ। অবশ্য এ সময় বিদেশিদের বিক্রির চাপও একটু বেশি ছিল। এর অর্থ হলো বিদেশিরা ঊর্ধ্বমুখী বাজারে শেয়ার ছেড়ে দিয়ে লাভ নিয়ে বেরিয়ে গেছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।