ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

ঊর্ধ্বমুখী বাজারে সতর্কতা

২০১০ সালের ধসে আরএসআই মান ছিল ৯০.৬৯, বর্তমানে ৯২.১১

মাসুদ রানা, টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৪
২০১০ সালের ধসে আরএসআই মান ছিল ৯০.৬৯, বর্তমানে ৯২.১১

ঢাকা: শেয়ারবাজার ওরে বাপরে বাপ। ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি।

ওখানে মরলেও ঢুকব না। ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধসের সময় এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী লোকসান গুণে সর্বশান্ত হয়েছেন। তাদের অনেকে এখনও বাজারে আছেন আর অনেকের মুখের বুলি প্রথম বাক্য তিনটি। তবে হ্যাঁ এই ভয়াবহ বাজার থেকে অনেকেই মুনাফা নিয়েছেন। আবার অনেক নতুন বিনিয়োগকারীও বাজারে আসছেন। যারা এর আগে বাজার ধসের সময় দেখেছেন কীভাবে তাদের পুঁজি হারিয়েছে। পুঁজি হারানোর পর কীভাবে আবার বাজার ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কোন কোন শেয়ার ধসের সময় পড়ে গেলেও ঊর্ধ্বমুখী বাজারে ফের দর বেড়েছে। কোন কোন শেয়ার ঊর্ধ্বমুখী বাজারে গুজবের কারণে অতিমূল্যায়িত হয়েছিল। এসব অভিজ্ঞতার সঙ্গে যারা বিশ্লেষণ করতে শিখেছেন মৌলভিত্তির শেয়ার কোনটি।

শেয়ারবাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা করতে চাইলে তাদের কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস ও  টেকনিক্যাল অ্যানালাইসি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। তবেই তারা গুজব নির্ভর না হয়ে প্রকৃত বিনিয়োগ করে কাঙ্ক্ষিত মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।    

সবার ব্যবসার জায়গা শেয়ারবাজার নয়। যার পর্যাপ্ত রিজার্ভ অর্থ রয়েছে তাদেরই এই ব্যবসায় আসা উচিত। আর হ্যাঁ এ ব্যবসার ধরন, আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষনের ক্ষমতা, টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস করার জ্ঞান যাদের রয়েছে তারাও আসতে পারেন এ ব্যবসায়।  

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ঠিক করতে হবে কখন শেয়ার কিনবেন, কখন বিক্রি করবেন এবং কখন শেয়ার কেনাবেচা না করে স্থির অবস্থানে রেখে দেবেন।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসে নির্দেশক (Indicator) আরএসআই (RSI), ম্যাকডি (MACD), মুভিং অ্যাভারেজসহ (Moving average) বিভিন্ন ধরনের বাজার বা শেয়ারের নির্দেশক রয়েছে। এসব নির্দেশক বলে দেবে আপনার কেনা শেয়ার ও বাজারের বর্তমান অবস্থা কী?

২০১০ সালে ধসের পর চলতি ২০১৪ বছরের আগস্ট মাস থেকে শেয়ারবাজারে বেশ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। লক্ষণও ভালো। তবে ঊর্ধ্বমুখী বাজারেই যে ভয়। ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে পুঁজি করে একটি চক্র দুর্বল শেয়ারকে অতিমূল্যায়িত করে ফেলে। যার মাশুল গুণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের Relative Strength index (RSI) নির্দেশকের বর্তমান মান ৯২.১১। যা ২০১০ সালে বাজার ধসের সময় ছিল ৯০.৬৯।

Relative Strength index অথবা RSI বাজারের overbought ও oversold নির্দেশ করে। এর স্কেলমান ০ হতে ১০০। সাধারণত: ২০ এর নিচে oversold, ৮০ এর উপরে overbought নির্দেশ করে। oversold অবস্থায় বড় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার buy (কেনা) এবং overbought অবস্থায় বড় বিনিয়োগকারীদের sell pressure (বিক্রির চাপ) থাকে (কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও হয়) ।

২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক যা বর্তমান DSEX নামে পরিচিত। এর rsi-এর সর্বোচ্চ মান কখন ওঠে, rsi-এর সর্বোচ্চ মান ওঠার কতদিন পর DSEX পড়তে শুরু করে তার একটি বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো-

২০১০ সালের ১৫ নভেম্বর rsi-এর সর্বোচ্চ মান ছিল ৯০.৬৯ এবং সর্বোচ্চ মানে ওঠার ১১ দিন পর DSEX পড়তে শুরু করে।

২০১১ সালের ১৪ জুলাই rsi-এর সর্বোচ্চ মান ছিল ৭৭.২০ এবং সর্বোচ্চ মানে ওঠার ৬ দিন পর DSEX পড়তে শুরু করে।

২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল rsi-এর সর্বোচ্চ মান ছিল ৭৫.৪০ এবং সর্বোচ্চ মানে ওঠার ৩ দিন পর DSEX পড়তে শুরু করে।

২০১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর rsi-এর সর্বোচ্চ মান ছিল ৭৩.৯৩ এবং সর্বোচ্চ মানে ওঠার ৩ দিন পর DSEX পড়তে শুরু করে।

২০১৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি rsi-এর সর্বোচ্চ মান ছিল ৬৬.৮৬ এবং সর্বোচ্চ মানে ওঠার পরের দিন থেকেই DSEX পড়তে শুরু করে।

২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর rsi-এর সর্বোচ্চ মান ছিল ৭৮.৭৭ এবং সর্বোচ্চ মানে ওঠার পরের দিন থেকেই DSEX পড়তে শুরু করে।

২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি rsi-এর সর্বোচ্চ মান ছিল ৮৩.৩৬ এবং সর্বোচ্চ মানে ওঠার ৯ দিন পর DSEX পড়তে শুরু করে।

২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি rsi-এর সর্বোচ্চ মান ছিল ৮৩.৩৬ এবং সর্বোচ্চ মানে ওঠার ৯ দিন পর DSEX পড়তে শুরু করে।

আর ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর rsi-এর সর্বোচ্চ মান দাঁড়িয়েছে ৯২.১১।

এই মান ৮০-এর উপরে অবস্থান করায় DSEX এখন overbought অবস্থায় আছে। যারা EXPART TA (Technical analyst) তারা এই ধরনের overbought DSEX-এ সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করে থাকেন।

বাংলাদেশ সময় : ১২১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।