অথচ ২০১০ সালের ধসের আগের তিন বছর (২০০৮, ২০০৯ এবং ২০১০ সালে) বিদেশিরা যথাক্রমে ৩ হাজার ৪২৭ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৭৪৫ টাকার শেয়ার বিক্রি করে পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন। সেই সময়ে তারা শেয়ার কিনেছিলেন ২ হাজার ২১১ কোটি ৩৪ লাখ ২৫৪ টাকার।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অল্প দামে ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিসহ ভাল কোম্পানির শেয়ারের দাম কেনার সুযোগ এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি পুঁজিবাজার নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আশ্বাসের ফলে বিদেশিরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে আসছেন।
এর ফলে পোর্টফোলিও ইনভেস্টরদের বিনিয়োগ ১৬ হাজার থেকে বেড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে বলে জানা গেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সর্বশেষ তথ্যে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল হোসেন বলেন, সরকারের আমলে দুই দফা ধসের পর আইনি কাঠামোগুলোতে অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন কেউ কারসাজি করে পার পাবে না। এ কারণে এখন প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) এবং প্লেসমেন্ট বাণিজ্য বন্ধে হয়ে গেছে। তবে একীভূতকরণের নামে কারসাজি করছে কোম্পানিগুলো। তাদের জন্য আইন তৈরি করা হচ্ছে। এসবের পাশাপাশি বিএসইসি ও স্টক এক্সচেঞ্জদ্বয়কে আন্তর্জাতিক মানের করা হয়েছে। ফলে বিদেশিরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়াও ডিএসই’র ২৫ শতাংশ মালিকানা কিনতে এরই মধ্যে বিদেশিদের প্রতিনিধিরা দলে দলে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে তিনি মনে করেন।
ডিএসইর তথ্য মতে, ২০১৪ সালে বিদেশিরা ৪ হাজার ৬১০ কোটি, ২০১৫ সালে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি এবং ২০১৬ সালে ৫ হাজার ৫৭ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছেন। তার বিপরীতে শেয়ার বিক্রি করেছেন যথাক্রমে ১ হাজার ৯৯১ কোটি, ৩ হাজার ৬৪০ এবং ৩ হাজার ৭১৬ কোটি টাকার শেয়ার। এর মধ্যে সর্বশেষ বছর নিট বিনিয়োগ এসেছে ১ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা।
তার বিপরীতে ২০১০ সালের ধসের আগের তিন বছর অর্থাৎ ২০০৮ সালে বিদেশিরা বিক্রি করেন ৮১৪ কোটি ৯৬ লাখ ৩৬ হাজার ৯৩৪ টাকার শেয়ার। তার বিপরীতে শেয়ার কিনেছেন ৫৫০ কোটি ৫৪ লাখ ৮৯ হাজার ৫৪৬ টাকার।
২০০৯ সাল বিক্রি করেন ৮৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ৭২ হাজার ৬২৮ টাকার শেয়ার। সেই সময় শেয়ার কিনছেন ৫৮১ কোটি ৬৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৫৩ টাকার।
আর ধসের বছর অর্থাৎ ২০১০ সালের আগে উচ্চদামে বিদেশিরা ১ হাজার ৭৫৫ কোটি ৭৪ হাজার ৩৫ হাজার ১৮২ টাকার শেয়ার বিক্রি করেন। সেই সময়ে তারা শেয়ার কিনেছিলেন ১ হাজার ৭৯ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৮৫৪ টাকার।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৭
এমএফআই/আরআই