ঢাকা: লকডাউনে পুঁজিবাজার বন্ধের ঘোষণায় সূচকের নেতিবাচক ধারা দেখা দেয়। সর্বাত্মক লকডাউনের আগে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে বিএসইসির এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী। তাদের মতে বাজার খোলা রাখার কারণে বিনিয়োগকারীরা তাদের ব্যবসা অব্যাহত রাখতে পেরেছেন। এতে তারা প্রফিট গেইন করতে পারছেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বিএসইসির মার্কেট খোলা রাখার যে সিদ্ধান্ত এটিকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা আস্থার সঙ্গে বিনিয়োগে ফিরেছে। এতে বাজার ইতিবাচক হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকায়। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৫৪ কোটি ৩৯ লাখ ১২ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীরা ৩ হাজার ৫১৪ কোটি ৪০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে চার কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২ হাজার ১৯ কোটি ২২ লাখ ৯২২ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৩০৫ কোটি ৪১ লাখ ৫২ হাজার ১০৭ টাকা বা ১৩.১৪ শতাংশ কম হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩২৪ কোটি ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৯ টাকার।
গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল।
ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৫০৪ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার ২৩০ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৪৬৪ কোটি ৯২ লাখ ৭০ হাজার ৬০৬ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৩৯ কোটি ৮৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬২৪ টাকা বেশি হয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৫.৪১ পয়েন্ট বা ১.০৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩১০.১৯ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১১.৪২ পয়েন্ট বা ০.৯৫ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩৬.৪৩ পয়েন্ট বা ১.৮৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়ে যথাক্রমে ১ হাজার ২০৯.০৮ পয়েন্ট এবং ২০২৬.৮২ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৬৭টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২১৭টির বা ৫৯.১৩ শতাংশের, কমেছে ৯০টির বা ২৪.২ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬০টির বা ১৬.৩৫ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো, রবি, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, এশিয়া প্যাসেফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ও লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার ৯৪৪ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২৯৭ কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার ৯২ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ২২৪ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ১৪৮ টাকা বা ৭৫ শতাংশ কমেছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৪৮.১৬ পয়েন্ট বা ০.৯৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৭৯.২১ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৭৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪৯টির দর বেড়েছে, ১০১টির কমেছে এবং ২৯টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২১
এসএমএকে/আরবি