ঢাকা, বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

স্পেন

থাইল্যান্ড থেকে মাজেদুল নয়ন

নদীর রাজা ‘চাও ফ্রেয়া’র বুকে

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৬
নদীর রাজা ‘চাও ফ্রেয়া’র বুকে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ব্যাংকক: সিয়াম রাজ্যের গভর্নর জেমস ম্যাক-কার্থি তার বইয়ে লিখেছিলেন, বহু বছরের পুরনো ইউরোপিয়ান মানচিত্রগুলোতে চাও ফ্রেয়া নদীর নাম মেনাম বা মি নাম। এখানে থাই ভাষায় মি অর্থ মা এবং নাম অর্থ পানি।

সিয়াম রাজ্যের প্রধান নদী এটি।

থাই রাজ পরিবার এ নদীটিকে গ্রান্ড ডিউক নামে অভিহিত করতেন। যার ইংরেজি অর্থ নদীদের রাজা। চাও ফ্রাওকে এখন থাইরা নদীদের রাজা হিসেবেই চেনেন। এই নদী বাম দিকে বেঁকে হয়েছে ‘পা সাক’ এবং ডানে ‘সাকেই ক্রাং’ নদী।

‘সাফান তাকসিন’ ব্যাংককে ‘চাও ফ্রেয়া’ নদীর একটি ঘাট। বুধবার বিকেলে (২০ জানুয়ারি) নামি এ বন্দরে। এখানে চারটি ঘাটে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার নৌকা রয়েছে। এই ঘাট থেকে নদীর পার্শ্ববর্তী চাট্রিয়াম, মান্দারিন ওরিয়েন্টাল, সাংগ্রিলার মতো পাঁচতারকা হোটেলগুলোর নিজস্ব নৌকা রয়েছে হোটেলে যাওয়া-আসার। এছাড়াও বড় ক্রুস রয়েছে পর্যটন চত্বর ‘এশিয়াটিক’-এ যাওয়ার। এখানে যাত্রীদের কোনো ভাড়া দিতে হয় না। শুধু কষ্ট করে লাইন ধরে দাঁড়াতে হয়।

ব্যাংকক শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে এ নদী। থাইল্যান্ডের নাখোন সাওন প্রদেশের পিং এবং নান নদীর মিলনস্থল থেকে চাও ফ্রেয়া নদীর উৎপত্তি। এরপরের ৩৭২ কিলোমিটার এটি ব্যাংকক শহরের মধ্য দিয়ে থাইল্যান্ডের দক্ষিণে শেষ পর্যন্ত বয়ে গেছে। এই নদীটির বেশ কয়েকটি শাখা নদী এবং খাল রয়েছে। এর মধ্যে খুলং খাল থাইল্যান্ডের ধান চাষে বড় ভূমিকা রাখছে।

১৬ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ নদীতে বেশ স্রোত রয়েছে। সাফান থাকসিন থেকে এশিয়াটিক যেতে ২০ মিনিটের ভ্রমণ। ব্যাংককের বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া এ নদী দিয়েই চলছে প্রায় দু’শ’ মিটার দীর্ঘ ফিশিং কার্গো। এতো ধীরে এ কার্গোগুলো যায়, ভালো করে না দেখলে বোঝা যায় না এটি যে চলছে। এটা মালবাহী ট্রেনের মতোই। মূল ইঞ্জিন নৌকাটি স্পিড বোটের মতো ছোট। আর পেছনে কয়েকটি কার্গো মিলে লম্বা এক ফিশিং কার্গো। ব্যাংকক থেকে থাইল্যান্ডের উপকূলীয় অঞ্চলে মাছ অানা-নেওয়ার কাজ করে এসব কার্গো।

চাও ফ্রেয়ার পার ধরে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। দু’ধারে রেস্টুরেন্ট, ক্লাব, বাজার, শপিং মল। আবার নদীতে ভাসছে পার্টি বোটও। কোনো ভ্রমণকারী দল নদীর মধ্যে ছোট আকারের লঞ্চ ভাড়া করে চলছে গান-বাজনা, হৈ-হুল্লোড়।

এই নদীর প্রকৌশল কার্যক্রম বেশ পরিকল্পিত। নদীকে স্বাভাবিক রাখতে কিছু কৃত্রিম খালও খনন করা হয়েছে।

চাও ফ্রেয়া ধরেই ব্যাংককে বাণিজ্য করতো ডেনমার্কের ইস্ট এশিয়াটিক কোম্পানি। তাই এ নদীতেই ছিল সিয়াম রাজ্যের ঘাট। যা এখন এশিয়াটিকের ঘাট।
রাতে অপরুপ সৌন্দর্যে উদ্ভাসিত হয় চাও ফ্রেয়া। পানির স্রোতের ওপর প্রতিচ্ছবি পড়ে আলো ঝলমলে ব্যাংককের। হু হু বাতাসে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নেন ব্যাংককবাসী। শহরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়েছে তারা।

আমাদের মন কেঁদে ওঠে আমার শহর ঢাকার বুড়িগঙ্গা আর তুরাগ নদীর জন্য। ধীরে ধীরে বিষ দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে দুই নদীকে। গলা টিপে ধরা হচ্ছে।


বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৬
এমএন/জেডএস

** ‘খরগোশ’ কার্ডে উড়াল ট্রেন ভ্রমণ
** যে টুক-টুক বন্ধ করতে চেয়েছিলেন মেয়র
** তালাবদ্ধ ভালোবাসা
** মানসিক শক্তিতে বলীয়ান থাই নারী
** কর্মব্যস্ত থাই নারীদের জীবন
** ফুকেট বাস টার্মিনাল ২
** ফাংঞ্জা'য় স্বর্ণে মোড়ানো বুদ্ধ
** ফুকেটের পাড়ে পাতং বিচ
** মানবপাচার ঠেকাতে হাইওয়েতে জোরালো তল্লাশি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

স্পেন এর সর্বশেষ