ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

ভারতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পরেই 'দাবা'

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫
ভারতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পরেই 'দাবা'

ঢাকা: একটা সময় ছিল ফুটবলের। আর এর পরের গল্পটা শুধুই ক্রিকেটময়।

কিন্তু এর বাইরেও কিছু কিছু খেলা আপন আলোয়া উজ্বল ছিল বরাবরই। ঠিক তেমনি একটি খেলার নাম দাবা। ফলে বাংলাদেশ পেয়েছে বিশ্বমানের দাবাড়ুদের। হয়তো পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা আর খেলাটিতে আপন করে না নেয়ার ফলে এখনও পূর্নতা পায়নি বাংলাদেশের দাবা। তাই বলে থেমে নেই বাংলাদেশের দাবার পথচলা। সারা বছরই দাবার চাল চলছেই...

বাংলাদেশে বর্তমানে অবস্থান করছেন বিশ্ব দাবা ফেডারেশন (ফিদে)-এর দক্ষিণ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট রাজেশ হরি জোশি। এই প্রথম বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের বাইরে কোন বড় ধরণের প্রতিযোগিতায় বিশ্ব দাবার কোন কর্তা ব্যাক্তি বাংলাদেশে সফরে এসে কোন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেছেন। তার কথাতেই উঠে এসেছে বাংলাদেশের দাবার বর্তমান অবস্থা।

রাজেশ হরি দক্ষিণ এশিয়ার দাবা সম্পর্কে বলেন, ‘এই অঞ্চলের দাবার অনেক সমস্যা। এটা কাটিয়ে উঠতে হলে স্ব স্ব সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। ’
তিনি প্রতিবেশী ভারতের কথা উল্লেখ করে বলেন, 'সেখানে রয়েছে ৪৫ গ্র্যান্ডমাস্টার। এক সময়কার বিশ্বসেরা বিশ্বনাথন আনন্দও রয়েছেন। তাদেরকে প্রাদেশিক সরকার ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার নানা ধরণের সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে। ভারতের মহারাষ্ট্র এবং তামিলনাড়ু সরকার দাবায় ব্যাপক সহায়তা করছে। তাদের কাছে দাবা যেন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পরেই স্থান পায়। '

তিনি বাংলাদেশের দাবা সম্পর্কে বলেতে গিয়ে উল্লেখ করেন উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদের কথা, ‘বাংলাদেশ সবসময়ই দাবায় ভাল ছিল। কিন্তু নানা কারণে পিছিয়ে পড়েছে। বর্তমানে তাদের আছে মাত্র ৫ম গ্র্যান্ডমাস্টার। পাইপলাইনে আন্তর্জাতিক দাবাড়ু সৃষ্টি করতে হবে। অথচ বাংলাদেশে এখন আছে মাত্র ২ আন্তর্জাতিক মাস্টার!'

তিনি আরো বলেন, 'বেশি করে ভালমানের দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজনের বিকল্প নেই। ফিদে এই জোনের প্রতিটি ফেডারেশনকে বেশ ভাল অংকের অর্থ সাহায্য করে থাকে। পাশাপাশি সরকারকে এগিয়ে আসলে এদেশের দাবা আবারও বিশ্ব মানে পৌঁছুবে। বাংলাদেশের দাবার উন্নয়নকল্পে ফিদে সবসময় সব ধরণের সহায়তা করতে প্রস্তুত। স্কুল পর্যায় থেকেই দাবা শুরু করতে হবে। '

তিনি আশা করেন, 'শেখ মনি দাবা প্রতিযোগিতাসহ আরও বেশকটি ভাল মানের দাবা প্রতিযোগিতা আয়োজিত হলে ফিদে এখানে নানা ধরনের ইকুইপমেন্ট দিয়ে সহায়তা করতে রাজী আছে। '

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, ভুটান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, নেপাল ও পাকিস্তান নিয়ে এশিয়ান জোনাল ৩.২ গঠিত। উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার ভারতের নয়! ১৯৮৫ সালে উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টারের খেতাব লাভ করেন বাংলাদেশের নিয়াজ মোরশেদ। তার পরে আরও চারজন এ খেতাবের অধিকারী হন। তাঁরা হলেন: জিয়াউর রহমান, রিফাত বিন সাত্তার, এনামুল হোসেন রাজীব এবং আবদুল্লাহ আল রাকিব। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্য, সেই ভারত এখন বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। এখন তাদের গ্র্যান্ডমাস্টারের সংখ্যা ৪৫, যাদের ৯ জনই মহিলা!

ওদিকে নেপালের রাজেশ নেপাল দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ছাড়াও বিশ্ব দাবার কার্যকরী কমিটিরও সদস্য। গোল্ডেন স্পোটিং ক্লাবের আয়োজনে বিশেষ আমন্ত্রণে শেখ মনি আন্তর্জাতিক দাবা টুর্নামেন্টে রাজেশ গত শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় আসেন।

তাঁর আগমন উপলক্ষ্যে সামনে রেখে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন রবিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের অডিটরিয়ামে তাঁকে বিশেষ সংবর্ধনা দেবে। একই অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত করা হবে সদ্য নির্বাচিত কমনওয়েলথ চেস এ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ এবং বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গাজী সাইফুল তারেককেও।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।