ঢাকা: সর্বশেষ দুই মৌসুমে ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ব্যালন ডি’অর জেতা রিয়াল মাদ্রিদের প্রাণভোমরা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ‘সেরা হওয়ার জন্যই জন্মেছেন’ জানিয়ে বছরের শেষ দিন নিজেকে উপস্থাপন করলেন। নিজেকে অহংকারী ফুটবলার না ভাবা সিআর সেভেন জানালেন, অবসরের পর ‘রাজা’ হিসেবেই থাকতে চান তিনি।
১। বর্তমান সময়ে ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে উদ্ধত, সবচেয়ে অহংকারী কে? শীর্ষস্থানীয় ফরাসি ক্রীড়া দৈনিক লেকিপ একটি অদ্ভুত জরিপ করে জানায়, সবচেয়ে অহংকারী ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ। তার নামটির পরেই ছিল রোনালদোর নাম।
২। স্প্যানিশ ম্যাগাজিন ডন ব্যালানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আর্জেন্টাইন তারকা গঞ্জালো হিগুয়াইন জানিয়েছিলেন, ‘রোনালদো একজন অহংকারী ফুটবলার। তার মারাত্মক ইগো সমস্যা রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে সেরা ফুটবলার বলা হবে না, ততক্ষন সে আপনাকে বন্ধু বলে মেনে নেবেন না।
৩। রোনালদোর অঙ্গভঙ্গি খুবই অহংকারী ও অশোভন ছিল বলে অভিযোগ করেন কর্দোভার কোচ মিরোস্লোভ ডিজুকিচ। স্পেনের ফুটবল বিষয়ক জনপ্রিয় পত্রিকা মারকাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে রোনালদোর ব্যাপারে এমন মন্তব্য করেন ডিজুকিচ।
রোনালদো ‘অহংকারী’ উপরের এই তিনটি পয়েন্ট যেমনই হোক না কেন, পর্তুগিজ তারকা নিজেই জানাচ্ছেন তার মাঝে কোনো অহংবোধ নেই। সমালোচকদের কড়া জবাব দিতে তিনি বলেন, ‘আসলে মানুষ আমার সাফল্যকে হিংসা করে। তাদের এমন মন্তব্যে আমি বিচলিত নই। তাদের এমন সমালোচনা আমার কাজে কিংবা আমার খেলায় বাজে প্রভাব ফেলে না।
বছরের শেষ ম্যাচে স্প্যানিশ লা লিগায় রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে ম্যাচে প্রথম পাওয়া পেনাল্টির সুযোগ নষ্ট করেন রোনালদো। দ্বিতীয়বার পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করেন তিনি। সে ম্যাচে দুটি গোল করে রিয়ালকে ৩-১ গোলের জয় পাইয়ে দেন পর্তুগিজ তারকা। তবে, সমালোচকরা বসে নেই। বছর শেষ হলেও বার্সেলোনা আর অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের পেছনে থাকায় দুয়ো শুনতে হচ্ছে রিয়ালের তারকাকে। রোনালদোর পেনাল্টি গোলগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে নিন্দুকেরা তাকে ডাকে ‘পেনালদো’ নামে। তাতে মোটেই খুশি নন রোনালদো।
পর্তুগিজ দলপতি জানান, এমন কিছু লোক রয়েছেন যারা আমাকে ঘৃনা করেন। তারা বলেন আমি নাকি অহংকারী, নিরর্থক আর উদ্ধত আচরণের মানুষ। তাদের কথায় আমার কিছুই যায় আসেনা। এটাই আমার সার্থকতা, সফলতা। কারণ আমি জন্মেছি সেরাটা দেওয়ার জন্যই।
রোনালদো আরও বলেন, অন্য মানুষ আমার সম্পর্কে কী মনে করেন তা নিয়ে ভাবিনা। সমালোচনা না শুনে কেউ বাঁচতে পারে না। এমনকি ঈশ্বরের দয়ায় পরিচালিত জীবনকেও কেউ টানতে পারেন না। আমি একজন সুস্পষ্ট বিবেকের মানুষ। রাতে আমার ভালো ঘুম হয়। ছোট কিংবা বড় অন্যকে যেভাবেই সাহায্য করি না কেনো তাতে আমার গর্ব হয়। আমি কঠিন জীবনের চাপ মোকাবেলা করতে পারি। এটা কোনো অহংকার নয়।
রোনালদো আরও যোগ করেন, আমার যখন ১১ বছর বয়স, তখন থেকেই আমি নিজের কাপড় ধৌত করতে শিখেছি। কারণ, আমার মানসিক শক্তি ছিল। সে সময় থেকে আমি এভাবেই চলতে চেয়েছি। এটা আমার কোনো অহংকার নয়, সার্থকতা। যদি বলেন ফুটবলে আমার কি অর্জন, আমি বলবো বুটজোড়া তুলে রাখার পর ‘রাজা’ হিসেবেই থাকতে পারবো।
রিয়াল মাদ্রিদের তারকা এ ফুটবলার ২০১৫ সালে ৩৭টি গোল করে রয়েছেন শীর্ষ গোলদাতার তালিকায় সবার ওপরে। এমন বছর পার করে অংহকার তার থাকারই কথা। তবে, নিজেই বারবার জানালেন, তিনি অহংকারী নন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫
এমআর