ঢাকা: ‘ক্রীড়া ধারাভাষ্য’ একটি শিল্পের নাম। বেতার কিংবা টেলিভিশন-উভয় মাধ্যমেই ধারাবর্ননার মাধ্যমে খেলাকে উপভোগ্য করে তোলেন ধারাভাষ্যকাররা।
স্বাধীনতার আগে পশ্চিমবঙ্গের আকাশবানী থেকে বাংলায় ধারাবিবরণী নিয়মিতভাবে প্রচারিত হলেও তখন দেশের জনসংখ্যার শতকরা ৫৫ জন বাংলাভাষি হওয়া সত্ত্বেও পূর্ব পাকিস্তানের রেডিও থেকে বাংলায় ক্রিকেটে চলতি বিবরণী দেওয়ার অনুমতি ছিল না। পাকিস্তান রেডিও থেকে উর্দু ও ইংরেজিতে একযোগে ধারাবিবরণী প্রচার করা হতো।
ঢাকা থেকে বেতারে বাংলায় ধারাভাষ্য প্রচার শুরু হয় ১৯৬৫ সালে। ১৭-১৯ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের রেডিও থেকে শহীদ মেজর ভাট্টি একাদশ ও স্কোয়াড্রন লিডার আলম একাদশের মধ্যকার তিনদিনের প্রদর্শনী ম্যাচের চলতি ধারাবিবরণী বাংলায় প্রচার করা হয়। ধারাভাষ্যকার ছিলেন তওফিক আজিজ খান ও আবদুল হামিদ।
এরপর ১৯৬৭ সালে এমসিসি ও পাকিস্তান দলের মধ্যে বেসরকারি টেস্ট ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমবারের মতো প্রথম শ্রেণির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আসরে বাংলায় চলতি ধারাবিবরণী দিয়েছিলেন আবদুল হামিদ, বদরুল হুদা চৌধুরী ও তওফিক আজিজ খান। বাংলায় ঢাকা থেকে ধারাভাষ্য দেয়া সম্ভব-এটা প্রমাণ করতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছিল প্রয়াত ধারাভাষ্যকার আব্দুল হামিদকে। তখন পশ্চিম বাংলার আকাশবানী থেকে বাংলায় ধারাবর্ননা করতেন পুষ্পেন সরকার, কমল ভট্টাচার্য, কমল বোসরা।
ঢাকা থেকে বেতারে ধারাবর্ণনা শুরু হতেই জনপ্রিয়তা পান বাংলাদেশের ধারাভাষ্যকাররা। আবদুল হামিদ, বদরুল হুদা চৌধুরী, তওফিক আজিজ খানদের পর আতাউল হক মল্লিক, মঞ্জুর হাসান মিন্টু, খোদা বক্স মৃধা, মোহাম্মদ মুসা, নূর আহমেদ, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, আলফাজ উদ্দিন আহমেদ, চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফাতরা ধারাভাষ্যকে নিয়ে যান শিল্পের পর্যায়ে।
এদের মধ্যে আলফাজ উদ্দিন আহমেদ ও চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফাত ছাড়া বাকিদের সবাই এখন প্রয়াত। এ দু’জনই এখন বাংলা ধারাভাষ্যের দিকপাল হয়ে আছেন।
খ্যাতিমান ধারাভাষ্যকারদের হারিয়ে তাই অনেকটা দিশেহারা বাংলা ধারাভাষ্য। বেশ কয়েকটি বেসরকারি রেডিও স্টেশন খেলার চলতি ধারাবিবরণী প্রচার শুরুর পর নতুন নতুন ধারাভাষ্যকার ক্রীড়াঙ্গনে যুক্ত হলেও সেভাবে পেশাদারিত্ব তৈরি হয়নি। বাংলা ধারাভাষ্য প্রচার শুরুর ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও কেন পেশাদারিত্ব আসেনি সেটি জানার চেষ্টা করেছে বাংলানিউজ। বাংলায় ক্রীড়া ধারাভাষ্য নিয়ে প্রতি সপ্তাহে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বাংলানিউজ। চলবে পুরো আগস্ট মাসজুড়ে। তুলে আনবে বাংলা ধারাভাষ্যের সমস্যা-সম্ভাবনার কথা। তাই বাংলানিউজের সঙ্গেই থাকুন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, ০৪ আগস্ট ২০১৬
এসকে/এমআরপি