ময়মনসিংহ: এক সময় মিডফিল্ডার হিসেবে মাঠ কাঁপিয়েছেন। ইনজুরি যন্ত্রণায় হতে পারেননি দেশসেরা মিডফিল্ডার।
নামের পাশেও যোগ করেছেন ট্রেবলজয়ী কোচের খেতাব। বিবেচিত হচ্ছেন দেশের নাম্বার ওয়ান কোচ হিসেবেও।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) অংশগ্রহণকারী ১২টি দলের কোচের মধ্যে দেশি কোচ হিসেবে কেবলমাত্র তার ঝুলিতেই রয়েছে পেশাদার লীগ শিরোপা জেতার সাফল্য।
‘রাউন্ড দ্য ক্লক’ ফুটবল নিয়ে নিরন্তর গবেষণায় মেতে থাকা স্বপ্নবান এ মানুষটি এখন সামলাচ্ছেন ঘরোয়া ফুটবলের জায়ান্ট ক্লাব শেখ রাসেলকে।
তার হাত ধরেই দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব শেখ রাসেল নিজেদের প্রথম লীগ শিরোপা জয় করেছিল। চলমান বিপিএলে’ও তাই কোচদের লড়াইয়ে বিদেশি কোচদের ছাপিয়ে মূল স্পটলাইটে রয়েছেন ময়মনসিংহ নগরীর এ সন্তান।
৪৬ বছর বয়সী এ কোচের হাত ধরেই এবার দ্বিতীয়বারের মতো দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এ আসরের শিরোপা জিততে চায় দলটি।
আর এ নিয়ে শতভাগ আশাবাদী ডাগআউটের লড়াকু এ কোচ। তার ভাষ্যে, ‘শেখ রাসেল সব সময় চ্যাম্পিয়ন হতেই টিম গড়ে’।
আমরা চলতি লীগে গত তিনটি ম্যাচে ভালো করতে পারিনি এটা ঠিক। কিন্তু লীগের ২২টি খেলার মধ্যে মাত্র ১৫টিতে জিতলেই চ্যাম্পিয়ন। তাই আমরা আশাবাদী টিম স্পিরিট নিয়েই এবারের শিরোপা নিজেদের ঘরে তোলার। ’
শুক্রবার (০৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর একটি হোটেলে অবস্থানরত এ কোচের সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল বাংলানিউজের। শেখ রাসেলের হয়ে এবার এ লীগে খেলছেন ফিকরুসহ তিন বিদেশি ফুটবলার।
২০০৮ সাল থেকে টপ লেভেলে কোচিং ক্যারিয়ারের গোড়াপত্তন ঘটে মারুফুল হকের। এ সময়টাতে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র, শেখ রাসেল ও শেখ জামালের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মোহামেডানের কোচ হিসেবে দু’বার জিতেয়েছেন ফেডারেশন কাপ। একবার সুপার কাপ ও দু’বার রানারআপ করিয়েছেন।
ধারাবাহিকতা অটুট ছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদের হয়ে কোচ হিসেবেও। তার সময়ে দু’বার লীগ রানারআপ হয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
২০১২-১৩ সালে ট্রেবল জয়ের মৌসুমে তার হাত ধরেই প্রথমবারের মতো লীগ শিরোপা জেতে শেখ রাসেল। কোচ হিসেবে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন শেখ জামালকেও। চারবার পেয়েছেন সেরা কোচের অ্যাওয়ার্ড।
তার অধীনেই শেখ রাসেল গত লীগে রানার্সআপ হয়। ২০১২ ও ২০১৩ সালে ফেডারেশন কাপ, ইন্ডিপেন্ডেন্টস কাপ, লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়। ওই বছরেই তারা সুপার কাপ রানারআপ হয়।
সাবেক ময়মনসিংহ স্টেডিয়ামে (বর্তমান নাম রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়াম) ১৯৯২ সালে ময়মনসিংহ জেলার হয়ে শেরে বাংলা কাপ ফুটবল খেলেছিলেন তিনি।
নিজ নগরী ময়মনসিংহে শেখ রাসেলের নিজের শিষ্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) এসে পৌঁছেন। টানা দু’দিন এক ঘণ্টা করে নগরীর পুলিশ লাইন্সে দলকে প্র্যাকটিস করে ঘাম ঝড়িয়েছেন। শিরোপা জয়ের কোনো বিকল্প নেই বলেই মনে করেন কোচ মারুফুল।
শনিবার (০৬ আগস্ট) বিকেলে ফেনী সকার ক্লাবের বিপক্ষে ময়মনসিংহ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে শেখ রাসেল। এ ম্যাচে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী কোচ মারুফুল হক বলেন, জয় পেতে হলে টিম স্পিরিটকে কাজে লাগাতে হবে।
প্রতিপক্ষ ফেনী সকারেরও যে কাউকে হারানোর যোগ্যতা রয়েছে। তবে আমরা জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে চাই।
দেশসেরা কোচ মারুফের এখন সেরা অস্ত্র চার স্ট্রাইকার এমিলি, কমল, মিঠু ও রনি ইনজুরিতে রয়েছেন। আর এ কারণে লীগে সবচেয়ে শক্তিধর দল গড়েও ভুগতে হচ্ছে শেখ রাসেলকে।
তবে ইনজুরি কাটিয়ে শনিবারই (০৬ আগস্ট) ফেনী সরকারের বিপক্ষে মাঠে নামছেন স্ট্রাইকার রনি। এদিন রনি জ্বলে উঠবেন এমন প্রত্যাশাই কোচের।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৬
এমএএএম/জেডএস