মিরপুর থেকে: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ইনিংসের ১২তম ওভারে মাশরাফি যখন ব্যাটিংয়ে এসেছেন, তখন দলটির অবস্থা খুবই নাজুক। জয়ের জন্য লক্ষ্য ১৯৫ রান।
ঠিক এমন অবস্থায় দেখা গেল হঠাৎ করেই মিরপুরের গ্যালারিতে উল্লাস শুরু হয়ে গেছে, কিছুটা প্রাণ ফিরেছে মাঠেও। কারণ মাশরাফি সাকিবকে ছয় মেরেছেন। ভালো কথা, মাশরাফি তো ছয় মারেনই এ আবার নতুন কী? কিন্তু এই উল্লাস স্বল্পস্থায়ী হলো না, চললো বেশ লম্বা সময়ব্যাপী।
একটি দু’টি নয়, গুণে গুণে সাকিবকে চারটি ছয় মারলেন মাশরাফি। কুমিল্লার দলীয় রানও হয়ে গেল ১৪৩। ততক্ষণে দলটির বিপিএলে এবারের আসরে তিন ম্যাচের ১৩২, ১২৯, ও ১৩১ রানের স্বল্প সংগ্রহ ছাড়িয়ে গেছে। জয়ের জন্য মাশরাফিদের প্রয়োজন আরও ৫২ রান। কিন্তু ওভার আছে মাত্র ১টি।
আর মাশরাফির ঝড়ো ব্যাটিংয়ের এই সংগ্রহে সতেজ হয়ে উঠলো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের ডাগ আউট, ফলে উল্লাস ফিরলো গ্যালারিতেও। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। কারণ হাতে কুমিল্লার হাতে উইকেট নেই, ওভারও নেই, হারের প্রহর গুণতে থাকা অবস্থা যাকে বলে। অবশেষে সেই অবস্থার পূর্ণতা পেল বিষতম ওভারে। মোহাম্মদ শহীদের তৃতীয় বলটিতে বলে বোল্ড আউট হয়ে মাশরাফি যখন ৩৫ বলে ৪৭ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংসে খেলে ড্রেসিং রুমে ফিরে গেলেন।
মাশরাফির এই বিস্ফোরক ইনিংস ও আরেক টেলএন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ৮ বলে ১৮ রানের ঝড়ো ইনিংসে কুমিল্লা নির্ধারিত ২০ ওভারে পেলো ১৬১ রানের সংগ্রহ। আর তাতেই এবারের বিপিএলে ১৩০ রানের কোটা পর হয়ে কুমিল্লার যোগে দিল ১৬০’র ক্লাবে। যা কিনা টানা হারের গ্লানিতে আত্নবিশ্বাস হারানো দলটির কাছে একটি প্রেরণা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘ঢাকায় হয়নি তো কী হয়েছে? চট্টগ্রামে হবে, হয়তো হবে। দলের টপ অর্ডার ইমরুল কায়েস তেমটিই ভাবছেন। তার ভাষ্যমতে, ‘এই ম্যাচে ১৯০ রানটা বেশিই। আমি বলবো আজকে আমরা যে খেলাটা খেলছি বিশেষ করে মাশরাফি ভাই শেষে যে ব্যাটিং করেছে সেটা আমাদের দলের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। কেননা এরআগে প্রতিটি ম্যাচেই আমরা ১২০ কিংবা ১৩০ এ অলআউট হয়ে গেছি। অবশ্যই দলের জন্য এটা বুস্ট হওয়ার মত বিষয়। পরের ম্যাচে যদি আমরা এই আত্নবিশ্বাস ধরে রাখতে পারি তাহলে অবশ্যই ভালো করবো। ’
সোমবার (১৪ নভেম্বর) ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলেন এসে এভাবেই মাশরাফির দায়িত্বশীল ব্যাটিং ও নিজেদের ভবিষ্যত ভাবনার কথা জানালেন ইমরুল।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন একটি দল হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসবে, ফিরে পাবে ছন্দ, মাঠের লড়াইয়ে প্রাণ ফিরিয়ে এনে বিপিএলকে করবে আরও প্রাণবন্ত এটাই সবার প্রত্যাশা।
বাংলদেশ সময়: ০৩২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৬
এইচএল/টিআই