জনপ্রিয় বেশকিছু গানের সুবাদে বেলাল খান এখন আলোচিত সংগীতশিল্পী। অডিও ও চলচ্চিত্রের গানে কাজ করছেন ক্যারিয়ারের শুরু থেকে।
বাংলানিউজ: পুরস্কারপ্রাপ্তি তো নতুন কিছু নয় নিশ্চয়ই…!
বেলাল খান: গানের সঙ্গে বোঝাপড়ার বয়স থেকে পুরস্কার পাচ্ছি। স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অনুষ্ঠানে গান করে বাহবা পাওয়ার সুখকর স্মৃতি আছে। এগুলো একদিক দিয়ে নতুন নয় আমার জন্য। অন্যভাবে বললে- নতুনই, এই কারণে যে, পুরস্কারপ্রাপ্তির সঙ্গে বাড়তি দায়িত্বসংযোগের একটা ব্যাপার থাকে। মনে হয়, পুরস্কার পেলাম, আরও সুন্দর সুন্দর কাজ করতে হবে।
বাংলানিউজ: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে পারেন- এমন কোনো সম্ভাবনা ছিলো?
বেলাল: আমার পরিচিতি যে গানে (পাগল তোর জন্য রে) সেটা ব্যবহৃত হয়েছিলো চলচ্চিত্রে। যদিও ছবিটিকে ছাপিয়ে গানটা বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছে, সঙ্গে আমার নামও। এরপরে বিভিন্ন অ্যালবামে কাজ করার পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানও নিয়মিতভাবে করেছি। প্রতিটি গান তৈরির সময় কিংবা পরে ইতিবাচক সাড়া যখন পাই- মনে হয়- এই তো চেয়েছিলাম! মাসুদ পথিকের ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ছবিটি নানাদিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এতে আমার গাওয়া ‘ইস্টিশন’ গানটি শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। পুরস্কার এলো কিন্তু অন্য গানে (মমতাজের গাওয়া ‘নিশিপক্ষী’)। এর অর্থ এই নয়, ‘ইস্টিশন’ কোনো দিক দিয়ে কম কিছু! অনেকের ধারণা- এই গানটি আমাকে মূল্যায়ন করার জন্য যথেষ্ট। পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা তো যে কারওরই থাকে, যখন ভালো কোনো জিনিস উৎপাদন করা হয়। ওই হিসেবে আমারও সম্ভাবনা হয়তো ছিলো…(হাসি)।
বাংলানিউজ: তো, পুরস্কার জয়ের পর কী ভাবছেন?
বেলাল: পুরস্কার পাওয়ার বেশ আগেই ঘোষণা দিয়েছিলাম, মিশ্র অ্যালবামে গাইবো না। এটা ঠিক থাকছে। নিজের জন্য নিজের মতো কিছু গান তৈরি করতে চাই। লিরিক নির্বাচন থেকে শুরু করে সুর ও সংগীতায়োজনে নিরীক্ষাগুলো করতে চাই। এ কারণেই অনুরোধে গাওয়া বা সুর করা কমিয়ে দিয়েছি। আর চলচ্চিত্রের গান তৈরি করার বেলায়ও আরেকটু সচেতন হবো।
বাংলানিউজ: আপনি তো জনপ্রিয় ধারার শিল্পী। নিরীক্ষামূলক কাজে একধরনের ঝুঁকি থাকে। আপনি কী প্রস্তুত?
বেলাল: স্ট্রাগলিং পিরিয়ডে অনেক বিষয় মাথায় নিয়ে কাজগুলো করতে হয়েছে। এর মধ্যে কিছু জনপ্রিয় গান করেছি, এও কম কিসে! এখন সুযোগ আছে, আমি নিরীক্ষা করতে চাই। ঝুঁকি নেওয়ার সাহসও আছে। তবে এটাও ঠিক, আমি এমন কিছু করতে যাচ্ছি না যেটা বাংলা গানের ইতিহাসে নেই। আমাদের গানের অতীত বেশ সমৃদ্ধ। চলতি ধারার বাইরেও কিছু করা যায় কি-না সেই চেষ্টা আছে আমার। এটা অনেকটা চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মতো ব্যাপার। এজন্য কাউকে না কাউকে ঝুঁকি নিতেই হয়। এতে অন্য অনেকের চলার পথ সুগম হয়, বৈচিত্র্য আসে, নতুন মাত্রা যুক্ত হয়।
বাংলানিউজ: আপনার দ্বিতীয় অ্যালবাম (আর একটিবার) প্রকাশের সময় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে একক করবেন না। তাহলে পরীক্ষামূলক গানগুলো কোন উপায়ে প্রকাশ পাবে?
বেলাল: উপায় তো অনেক আছে। তার আগে বলে নিই, আমি তৃতীয় একক অনেকখানি গুছিয়ে ফেলেছি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেটা অ্যালবাম আকারেই আসবে। এ ছাড়া অন্য প্ল্যাটফর্মেও গানগুলো থাকবে। একাধিক অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাকে তাড়া দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রতিষ্ঠানের পছন্দে নয়, নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েই গানগুলো তৈরি করেছি। আমার চিন্তার সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন- এমন কারও হাতে তুলে দেবো অ্যালবামটি। আশার কথা হলো, প্রযোজকরা এখন বিনিয়োগ করছেন। চিত্রটাও পাল্টেছে। তাই আর একক অ্যালবাম না করার ইঙ্গিত দিলেও এখন সেটা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৬
এসও/জেএইচ
তারার ফুল
‘কাউকে না কাউকে ঝুঁকি নিতেই হয়’
সোমেশ্বর অলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।