বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই বললেন এই তরুণ অভিনেত্রী। পরিবেশ সচেতনতার পাশাপাশি এই আলাপে উঠে আসে তার ক্যারিয়ার, ভবিষ্যত পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়।
ক্যারিয়ার নিয়েও কী তিনি পরিবেশের মতোই সচেতন কি-না? শোনা যাক তার কথাতেই। বললেন, আমার মনোযোগ এখন পুরোপুরি ক্যারিয়ারের দিকে। ভালো গল্প ও নির্মাতা পেলেই স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে রাজি হই। আসলে দর্শক মূলত গল্পটাই প্রথমে দেখেন, এরপর নির্মাণ। তাই কাজ করার সময় আমিও এই দু’টি বিষয়ের ওপর বেশি জোর দিই। এ নিয়ে কখনই ছাড় দিই না। ’
ক্যামেরার সামনে আইরিন প্রথম দাঁড়ান হিমেল আশরাফ পরিচালিত ‘গপ্পো’ ধারাবাহিকে। এরপর একের পর এক নাটকে ডাক পেয়েছেন তিনি, কাজও করছেন। সংখ্যা হিসেব করে বললেন, এখন পর্যন্ত ৩০টির বেশি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেছি। প্রায় ১৫টির মতো একক নাটক, ২০টির মতো বিজ্ঞাপন, বেশকিছু মিউজিক ভিডিও এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমায়ও রয়েছে।
বর্তমানে কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও উপরে ওঠার পথটা মসৃণ ছিলো না আইরিনের। তার ভাষ্যে, আমি সংগ্রাম করে করে কাজ করছি। ধীরগতিতে এগিয়ে যেতে হয়েছে। আমাকে সাপোর্ট দেওয়ার মতো কেউ ছিল না ও এখনও নেই। তাছাড়া কোনো সুন্দরী প্রতিযোগিতার মাধ্যমেও আমি মিডিয়ায় আসিনি। যোগ্যতার প্রমাণ রেখেই এখানে এই পর্যায়ে এসেছি। অভিনয়ে একই ধরনের চরিত্রে নিজেকে বেঁধে ফেলতে চান না আইরিন। চেষ্টা করেন সবসময় ব্যতিক্রম ও নতুন চরিত্রে নিজেকে ফুটয়ে তুলতে।
জানালেন, ‘একটি চরিত্রের কাজ দর্শক পছন্দ করার পর নির্মাতারা বেশিরভাগ সময়ে ওই ধরনের চরিত্রেই বেশি ডাকেন। আসলে এমনটা হওয়া উচিৎ নয়।
‘এমনটা হলে একজন শিল্পী নিজেকে ভাঙার যে ব্যাপারটা থাকে সেটা আর থাকে না, দর্শকদের কাছেও বিষয়টি একঘেয়ে হয়ে দাঁড়ায়। ’
আর মানুষ হিসেবে মাদার তেরেসাকে অসম্ভব পছন্দ করেন আইরিন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাকে আদর্শও মনে করেন তিনি। মানুষের প্রতি মাদার তেরেসার ভালোবাসা ও সহমর্মিতার যে দর্শন তা খুব টানে আইরিনকে।
শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ এই মহিয়সীর জীবনী নিয়ে যদি দেশে কখনও বায়োপিক নির্মিত হয়, তাহলে তাতে অভিনয় করতে চান আইরিন। তার ভাষ্য, মাদার তেরেসাকে নিয়ে আমি অনেক পড়াশোনা করেছি। তার মহানুভবতা আমায় মুগ্ধ করেছে। তার জীবনীভিত্তিক সিনেমা অথবা কোনো নাটক হলে তাতে অভিনয় করতে চাই।
এছাড়া অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করার ইচ্ছার কথাও জানালেন এই অভিনেত্রী। এদিকে আইরিনের চোখ রয়েছে সিনেমার দিকেও। সেভাবে নিজেকে প্রস্তুতও করছেন। জানালেন, কিছু সিনেমার প্রস্তাব পেলেও গল্প বা আনুষঙ্গিক বিষয় পছন্দ না হওয়ার কারণে বড় পর্দায় কাজ করা হয়নি।
‘আমার মনে হয় সবারই স্বপ্ন বড় পর্দায় নিজেকে দেখা। সেক্ষেত্রে আমিও চাই। ভালো গল্প পেয়ে গেলে দেরি করবো না,’ যোগ করেন তিনি।
বর্তমানে রওনক হাসানের ‘বিবাহ হবে’, নাজনীন হাসান চুমকির ‘নাগরদোলা’ ও কাউসার আহমেদ পরিচালিত ‘বকুল ফুল’ নিয়ে বেশ ব্যস্ত আইরিন। সবগুলো ধারাবাহিকই নতুন বছরের শুরুতে টেলিভিশনে প্রচার হবে। এখন তার অভিনীত ‘মকো মালয়েশিয়া’ চ্যানেল আইতে প্রচার হচ্ছে।
অনেক কথাই তো হলো, সংসার নিয়ে জানতে চাইলেই বললেন রাজ্যের স্বপ্নের কথা। তবে হুট করেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চান না। আইরিন বলেন, বিয়ে নিয়ে আমার স্বপ্ন অনেক বড়। বিয়েতে কী পরবো, কীভাবে সাজবো সবই ভেবে রেখেছি। তবে তাড়াহুড়া নয়, সময় নিয়ে সঠিক মানুষটির সঙ্গেই ঘর বাঁধতে চাই। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে আইরিন ছোট। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত অভিনয় করে যাওয়ার ইচ্ছা তার। সাবলীল উত্তর, বুড়ো হয়ে দাদি-নানির চরিত্রেও অভিনয় করে যেতে চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
জেআইএম/এমএ