ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

এখনও সময় জানায় আমজাদের সেই ঘড়ি

মাহবুব আলম, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬
এখনও সময় জানায় আমজাদের সেই ঘড়ি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সুরমা নদীর তীর ঘুরে: বুধবার, সকাল ১০টা। হঠাৎ সুরমা নদীর উত্তর তীরে ক্রিং ক্রিং আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।

পাশের একজন বললেন, ১০টা বাজে।

ঘড়ির দিকে না তাকিয়েই সঠিক সময় বলে দিলেন ওই ব্যক্তি। হ্যাঁ, ঠিকই তো! ঘড়ির কাঁটা ঠিক ১০টারই ঘরে।

এভাবেই দিন-রাত ঘণ্টি বাজিয়ে এখনও পূণ্যভূমি সিলেটের মানুষকে সময় বলে দেয় আলী আমজাদের ঐতিহ্যবাহী ঘড়ি।

কীন ব্রিজেরে পাশেই চাঁদনীঘাটে রয়েছে এ ঘড়ি। কীন ব্রিজ থেকে নীচের দিকে তাকালে, চাঁদনী ঘাটের কাছেই চোখে পড়ে এটি।

উনবিংশ শতকের স্থাপনা এ ঘড়ি, যা মূলত একটি বিশাল ঘড়ি, একটি ঘরের চূড়ায় স্থাপিত।

মাঝে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে প্রাচীন শ্রী হট্টের এ ঐতিহাসিক নিদর্শনটি অচল ছিল বেশ কয়েক বছর।

বিভিন্ন সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর প্রবাসিসহ অনেকের সহযোগিতায় তা চালু হয়। সবশেষে ঘড়িটি সচল করে সিটি করপোরেশন।

ইতিহাস বলে, ঘড়িটি নির্মিত হয় ১৮৭৪ সালে। তৎকালীন বড়লাট লর্ড নর্থ ব্রুক সিলেট সফরে এলে তার সম্মানে এটি নির্মাণ করা হয় আলী আমজাদের জমিদারির তহবিলের অর্থ থেকে। সেই থেকে এটি আলী আমজাদের ঘড়ি হিসেবেই পরিচিত।

জানা যায়, ঘড়ির ডায়ামিটার আড়াই ফুট এবং কাঁটা দুই ফুট লম্বা। এ অঞ্চলে যখন ঘড়ির অবাধ প্রচলন ছিল না, মানুষ সূর্যের দিকে তাকিয়ে সময় হিসেব করতেন। আর তখনই এ ঐতিহাসিক ঘড়িঘরটি নির্মিত হয়।

সিলেট নগরীর মিরজাজাংয়ালের বাসিন্দা সত্তর বছরের মিরজা জালাল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বাবা-কাকারা বলেছেন, ওই আমলে মানুষজন শহরের প্রবেশপথে স্থাপিত ঘড়িঘরের সময় দেখে আসা-যাওয়া ও কাজকর্ম করতেন।

হজরত শাহ জালালের (র.) স্মৃতির এ শহরের প্রবেশদ্বারে লোহার খুঁটির ওপর ঢেউটিন দিয়ে সুউচ্চ গম্বুজ আকৃতির এ ঘড়িঘরটি তখন থেকেই পর্যটকদের আকষণ করছে।

‘বিরাট আকারের ডায়াল ও কাঁটা সংযুক্ত সুবিশাল ঘড়িটির ঘণ্টাধ্বনি চারপাশে অনেক দূর পর্যন্ত শোনা যেতো। তবে অন্যান্য শব্দের কারণে এখন তা প্রায় দুই কিলোমিটার যায়’ বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাহমান।

শহরের কিশোরী মোহন প্রাথমিক স্কুলের এ শিক্ষক জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় এটি হানাদার বাহিনীর গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৮৭ সালে যা সংস্কার হয়েছে। পরে ২০১১ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন এই ঘড়িটিকে পুনরায় মেরামত করে। যা ২৪ ঘণ্টাব্যাপী সময় জানিয়ে দিচ্ছে মানুষকে।

সিলেট রেলওয়ে স্টেশন অথবা কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে ঘড়িটির অবস্থান। ৯ ফুট ৮ ইঞ্চি লম্বা ঘড়িঘরের প্রস্থ ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি। ছাদ থেকে ঘড়ি অংশের উচ্চতা: ৭ ফুট, যা উপরের অংশে ৬ ফুট।

এদিকে ঘড়ি সংলগ্ন কীন ব্রিজও নজর কাড়ে মানুষের। আর এর পাশেই অবস্থিত জমিদার জিতু মিয়ার বাড়ি।


**পর্যটন বর্ষের প্রচারণা নেই মাধবকুণ্ডে
** ঝরনার পাহাড়ে ফাটল, সতর্ক হোন
**জাফলং পর্যটনে বাধা ‘সড়ক’
**অযত্নে-অবহেলায় আদিত্যপুর গণকবর

**যাত্রীর ইয়ার্ডে পাবলিকের কার পার্কিং
** ফাংশন নেই শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে
** সন্ধ্যে হতেই দোকান উঠে যায় বানিয়াচং বাজারে
** দু’টি পাতার একটি কুড়ির নিচেই অন্ধকার
** পর্যটনে আকর্ষণ তারাও
** স্বচ্ছ লেকে লাল শাপলার নিমন্ত্রণ
** ‘মৌলভীবাজার রুটের অধিকাংশ যাত্রীই পর্যটক’

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬
এমএ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।